সংস্কার উদ্যোগের স্থায়িত্ব বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর নির্ভরশীল: প্রধান বিচারপতি

সংস্কার উদ্যোগের স্থায়িত্ব বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর নির্ভরশীল: প্রধান বিচারপতি

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া সংস্কার উদ্যোগগুলোর দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব অনেকাংশেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর নির্ভরশীল।

আজ সোমবার (১৭ মার্চ) সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ আইন সমিতির ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, জাতি পুনর্গঠনের এই ক্রান্তিলগ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত একটি মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ আইন সমিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই সমিতির সদস্যদের মেধা, আইনি দক্ষতা ও গভীর প্রাতিষ্ঠানিক সংযোগ দেশে ন্যায়বিচার, দক্ষতা ও জবাবদিহিতামূলক বিচারিক সংস্কারের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে আইন সমিতি অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণপূর্বক অংশীজনদের সাথে আলোচনা পরিচালনা, বিভিন্ন নীতিগত প্রশ্নে পরামর্শ প্রদান এবং আইন পেশার সাথে সম্পৃক্ত পেশাজীবীদের একত্রীকরণের মাধ্যমে আইন ও বিচারসেবা সংস্কার সংক্রান্ত প্রস্তাবসমূহের বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আগামী দিনগুলো বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বায়ত্বশাসন অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুনসুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইফতার বিতরণ করবেন প্রধান বিচারপতি

এ প্রসঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশ আইন সমিতি বিচার বিভাগ সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক ঘোষিত রোডম্যাপ এর বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

এছাড়া, তিনি তাঁর বক্তব্যে অভিমত ব্যক্ত করেন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার উদ্যোগগুলোর দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব অনেকাংশেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর নির্ভরশীল।

এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ কেবল তখনই কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে যখন স্বতন্ত্র বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণ নিশ্চিত হয়।

তাই তিনি বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুপ্রীম কোর্টের অধীনে বিচার বিভাগের জন্য একটি স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তাগিদ প্রদান করেন যা অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কার্যক্রমকে টেকসই ও অর্থবহ করে তুলতে সক্ষম হবে।

ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল  মো. আসাদুজ্জামান, আইন সমিতির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মনির হোসেন।

বাংলাদেশ আইন সমিতির সদস্য সচিব মো. কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, আইন সচিব শেখ আবু তাহের, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আজিজ আহমেদ ভূঞা, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী, স্পেশাল অফিসার মোয়াজ্জেম হোছাইন, ডুলার সভাপতি শেখ আলী আহমেদ খোকন, ড. শাহজাহান সাজু উপস্থিত ছিলেন।

ইফতার মাহফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মাকসুদ উল্লাহ। ইফতার মাহফিলে বাংলাদেশ আইন সমিতির বিপুল সংখ্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।