কক্সবাজারে ৩১ হাজার ইয়াবা পাচারের মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
এজলাস, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের

কক্সবাজারে ৫ কোটি টাকার ক্রিস্টাল মেথ পাচারের মামলায় এক রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের এক কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস) পাচারের মামলায় এক রোহিঙ্গা আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একইসাথে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক নিশাত সুলতানা আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এ রায় ঘোষণা করেন। একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

দন্ডিত আসামী হলেন- কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের মৃত ফয়েজ আহমদের পুত্র সৈয়দুল আমিন (৩৫)।

রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কুতুব উদ্দিন এবং আসামীর পক্ষে অ্যাডভোকেট আবিদুর রহমান মামলাটি পরিচালনা করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

২০২২ সালের ২১ জানুয়ারী সন্ধ্যা ৬ টা ৪০ মিনিটের দিকে রামু উপজেলার মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টের ৩০ বিজিবি’র একটি টিম একই উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের গোয়ালিয়া সাইক্লোন সেন্টারের কাছে রাস্তার উপর এক অভিযান চালিয়ে একটি সিএনজিকে থামিয়ে সিএনজি’র যাত্রী রোহিঙ্গা সৈয়দুল আমিন ও রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ফাহাদ (১৪) কে আটক করে। পরে সৈয়দুল আমিনের কাঁধে থাকা একটি স্কুল ব্যাগ থেকে ৫ কোটি টাকা মূল্যের এক কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস) উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ৩০ বিজিবি’র নায়েব সুবেদার মোঃ মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে রোহিঙ্গা সৈয়দুল আমিন ও রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ফাহাদ (১৪) কে আসামী করে রামু থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার রামু থানা মামলা নম্বর : ৪০, তারিখ : ২১/০১/২০২২ ইংরেজি, যার জিআর মামলা নম্বর : ৪০/২০২২ ইংরেজি (রামু) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৮০৯/২০২৩ ইংরেজি।

বিচার ও রায়

মামলাটি বিচারের জন্য ২০২৩ সালের ২১ মার্চ কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক নিশাত সুলতানার আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলার অপর আসামী একই রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের মোহাম্মদ ফাহাদ (১৪) শিশু হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে পৃথক চার্জশীট (দোষীপত্র) দিয়ে তার বিচারের জন্য শিশু আদালতে পাঠানো হয়।

রোহিঙ্গা সৈয়দুল আমিনের মামলায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতে ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীর পক্ষে তাদের জেরা, আসামী পক্ষে ৪ জন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদান, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা, আসামীর আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য্য করা হয়।

রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক নিশাত সুলতানা ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ১০(গ) ধারায় মামলার আসামী রোহিঙ্গা সৈয়দুল আমিনকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, একইসাথে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।