মৌলভীবাজার জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুজন মিয়া হত্যা মামলায় ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পৌর শহরের রঘুনন্দনপুর গ্রামের মৃত সিজিল মিয়ার ছেলে মো. আরিফ মিয়া, দিশালোক এলাকার আনসার মিয়ার ছেলে হোসাইন আহমদ সোহান, রাজনগরের মাথিউরা চা বাগানের মনা নাইডুর ছেলে লক্ষ্মণ নাইডু ও নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া থানার কাশিপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রহিম।
লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, অগ্রণী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড মিসবাহ রহমান ও হত্যার পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া মুজিবের পূর্ব শত্রুতা ছিল। এরই জের ধরে নজির মিয়া মিসবাহকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রাম বারের ৮৬৭ আইনজীবীর সদস্যপদ বাতিল
গ্রেপ্তারকৃত আসামি লক্ষ্মণের মাধ্যমে মিসবাহকে মারার জন্য টাকার বিনিময়ে লোক ভাড়া করে নজির মিয়া মুজিব। নজির মিয়া ভাড়াটিয়া খুনিদের লক্ষ্মণের কাছে মোবাইলের মাধ্যমে টার্গেটের ছবি প্রেরণ করে।
ঘটনার দিন বাণিজ্য মেলায় ভাড়াটিয়া খুনিরা ভিকটিম সুজনকে দেখে মিসবাহ ভেবে নজির মিয়া মুজিবকে কল দিয়ে বলে, যে লোকের ছবি পাঠিয়েছো সেই লোককে আমরা পেয়েছি। নজির মিয়া মুজিব ভাড়াটিয়া খুনিদের ভিডিও কলের মাধ্যমে টার্গেট দেখে নিশ্চিত করতে বলে।
ভিকটিম সুজনকে দুষ্কৃতকারী আব্দুর রহিম ইমুতে ভিডিও কল দিয়ে নজির মিয়া মুজিবকে টার্গেটকে দেখায়। তখন ভাড়াটিয়া খুনিরা জানায় তোমার পাঠানো ছবির সাথে মিল আছে। নজির মিয়া মুজিব তাদেরকে মারতে বলে।
ঘটনার দিন ফুসকা চটপটির দোকানের পাশে ফুটপাতের ওপর আইনজীবী সুজন মিয়াকে চেয়ারে বসা দেখে আসামিরাসহ আরও অন্যান্য ১০-১২ জন অতর্কিত আক্রমণ করে ধারালো চাকু দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে।
পুলিশ সুপার বলেন, ৬ এপ্রিল রোববার রাত ১১টার দিকে পৌরসভার সামনে ফুচকার দোকানের পাশে আইনজীবী সুজন মিয়াকে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন মিলে ধারালো চাকু দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
তিনি বলেন, মামলার পর শহরের বিভিন্ন এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে বুধবার মামলার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সদর উপজেলার খালিশপুর গ্রামের সামছুল হকের ছেলে নজির মিয়া মুজিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। পুলিশ অন্যান্য পলাতক হত্যাকারীদের পরিচয় উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে হত্যাকারীদের নাম প্রকাশ করছে না।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, সদর মডেল থানার ওসি গাজী মাহবুবুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি জাফর হোসেনসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।