সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক গুরুতর অসুস্থ হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আজ সোমবার (২১ এপ্রিল) তার ছেলে ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, তার বাবাকে রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের জুনিয়র আইনজীবী শিশির মনির জানান, তার অবস্থা গুরুতর এবং তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। সবাইকে তার জন্য দোয়া করার অনুরোধ জানান তিনি।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১১ বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থানের পর ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। এরপর তিনি আবার সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন। ২০২৪ সালের ৬ জানুয়ারি তার জুনিয়র আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক একসময় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে চলে যান। এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতাদের পক্ষে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আইনজীবী হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন : সুপ্রিম কোর্টের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রুল
২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি যুক্তরাজ্যে থাকা অবস্থায় দল থেকে পদত্যাগ করেন। সে সময় জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান তার পদত্যাগে দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন।
পরে তিনি ‘আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি’-তে যুক্ত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০২৪ সালের ১৭ আগস্ট তিনি সেখান থেকেও পদত্যাগ করেন।
দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তিনি মূলত একজন পেশাদার আইনজীবী এবং রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার ইচ্ছা নেই। তিনি বলেন, “আমি কোর্ট রুম ব্যারিস্টার। আইনের শাসনের মাধ্যমে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে চাই।”
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার হন। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনে আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন এবং ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে, ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।
তিনি ১৯৯০ সালে “দ্য ল’ কাউন্সেল” নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে মনোনীত হন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার দুই ছেলেই ব্যারিস্টার এবং সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত।