খাস কামরায় নয়, বিচারিক আদালতের আদেশ-রায় দিতে হবে প্রকাশ্য আদালতে
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

আমদানি পণ্যের কিউআর কোড বাধ্যতামূলক করতে হাইকোর্টের রুল

আমদানিকৃত পণ্যে কিউআর (QR) কোড বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন যাচাইকরণ সফটওয়্যার তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন, যার মাধ্যমে প্রতিটি পণ্যের বৈধতা যাচাই করা যাবে। এ লক্ষ্যে গঠিত কমিটিকে আগামী ৩ মাসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, ব্যারিস্টার রাগীব কবির ও অ্যাডভোকেট আরফান সুলতানা।

এর আগে ২০ এপ্রিল, জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন, যেখানে আমদানিকৃত পণ্যে QR কোড সংযুক্তকরণ বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রিটে বলা হয়, দেশে বিপুল পরিমাণ ভুয়া ও অননুমোদিত পণ্য বাজারজাত হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্য, বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।

রিট আবেদনে একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন যাচাইকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, আমদানিকারকদের জাতীয় ডাটাবেজ তৈরি এবং QR কোড সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানানো হয়।

রিটে আরও উল্লেখ করা হয়, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তা জনস্বার্থের পরিপন্থী এবং তাদের এই ব্যর্থতা আইনি কর্তৃত্বের বাইরে। তাই আদালতের কাছে রুল চাওয়া হয় যে, কেন এসব কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করা হবে না।

রিটকারীদের মধ্যে ছিলেন

মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া, মো. রোকনুজ্জামান, রাগিব কবির, আবু শাহেদ, রেহেমিন চৌধুরী, আরফান সুলতানা, মো. সাইফুল ইসলাম, হাসান ইসহাক ভূঁইয়া, মো. আরিফ চৌধুরী এবং উম্মে আইমান জেনি।

রিটে বিবাদী করা হয়েছে

  • বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব

  • অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব

  • আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের (সিসিআইই) প্রধান

  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)

  • বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান

  • বিএসটিআইর মহাপরিচালক

আইনজীবী মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া বলেন,

যেহেতু বাজারে ভুয়া ও ক্ষতিকর পণ্য সহজেই প্রবেশ করছে এবং সরকারের রাজস্ব হারাচ্ছে, তাই একটি কেন্দ্রীয় যাচাইকরণ ব্যবস্থা ও কিউআর কোড বাধ্যতামূলক করা হলে এই অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব হবে।

এই আদেশ বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের আমদানি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে ভোক্তা সুরক্ষা, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।