বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের করা মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নেওয়ার যে নির্দেশনা ডিএমপি কমিশনারের অফিস আদেশে উল্লেখ ছিল, তার কার্যকারিতা স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, সেটি আজ বহাল রেখেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এর আগে, ৭ মে চেম্বার আদালতও একই আদেশ দিয়ে বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে পাঠান। সে সময় চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হকের আদালত হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রাখেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ এপ্রিল ডিএমপির এক অফিস আদেশে বলা হয়, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সংক্রান্তে রুজুকৃত মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এজাহার নামীয় আসামির সংখ্যা অধিক। এসব মামলার এজাহারনামীয় কিংবা তদন্তে প্রায় আসামি গ্রেপ্তারের নিমিত্তে উপযুক্ত প্রমাণসহ (ভিকটিম/বাণী/প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী, ঘটনা সংশ্লিষ্ট ভিডিও/অডিও/স্থির চিত্র ও সিডিআর ইত্যাদি) অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গ্রেপ্তার ফরতে হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত বৈষম্যবিরোদী মামলার এজাহারনামীয় কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার না ফরার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২০ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন একটি রিট আবেদন দাখিল করেন। শুনানি শেষে ২৩ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর বেঞ্চ তিন মাসের জন্য ডিএমপি অফিস আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করেন। একইসঙ্গে কেন আদেশটি অবৈধ ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
ডিএমপির পক্ষ থেকে ওই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ৭ মে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে বিষয়টি চূড়ান্ত শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠান।
আজ আপিল বিভাগ রুল জারিকৃত হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সংক্রান্ত মামলাগুলোর আসামিদের গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন অনুমতির বাধ্যবাধকতা আপাতত আর থাকছে না।