কক্সবাজারে ৩ কোটি টাকার ইয়াবা পাচারের মামলায় ৭ রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন

কক্সবাজারে ৫ কোটি টাকার ক্রিষ্টাল মেথ উদ্ধার : ৬ রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ৫ কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্রিস্টাল মেথ (আইস) উদ্ধারের ঘটনায় ৬ রোহিঙ্গা মাদক কারবারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কক্সবাজারের আদালত।

১৮ জুন (বুধবার) কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আব্দুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন। আসামিদের প্রত্যেককে ৩০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

একই আদালতের জেলা নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

দণ্ডিতদের পরিচয়

দণ্ডিতরা হলেন- মো. ইলিয়াছ (৫৫), পিতা মৃত মুজিবুল্লাহ, মোহাম্মদ করিম (২০), পিতা মৃত করিম উদ্দিন, মো. ইমাম হোসেন (২৭), পিতা মো. আনু, শাহ আলম (৩০), পিতা মো. আবুল কালাম, মো. ফোরকান (২৬), পিতা মৃত জাকারিয়া এবং আবদুল হাফেজ (৪০), পিতা আবদুল করিম। তাঁরা মিয়ানমারের আকিয়াব এলাকার বাসিন্দা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। রায়ের সময় তাঁরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার পটভূমি

২০২২ সালের ৯ মার্চ বিকেলে বিজিবির ২ নম্বর ব্যাটালিয়নের একটি টহল দল টেকনাফের নাফ নদীর মোহনায় একটি ট্রলারে অভিযান চালিয়ে ৬ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে। ট্রলারের পাটাতনের নিচ থেকে ১ কেজি ৫৯ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস) উদ্ধার করা হয়, যার বাজারমূল্য ৫ কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

এ ঘটনায় বিজিবি সদস্য মো. আখিরুজ্জামান বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর: ৩৫, তারিখ: ১০/০৩/২০২২)। পরবর্তীতে মামলাটি জিআর ২২৮/২০২২ এবং এসটি ১৫৩/২০২৩ নম্বর হিসেবে বিচারাধীন হয়।

বিচার প্রক্রিয়া

২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি চার্জ গঠন করে মামলার বিচার শুরু হয়। মোট ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার ফল, আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

আইনজীবী প্যানেল

  • রাষ্ট্রপক্ষে: অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম (পিপি)

  • আসামিপক্ষে: অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম (৫ জনের পক্ষে) এবং অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুর রশিদ (রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী, ১ জনের পক্ষে)

রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা মূলে দণ্ডিতদের কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।