হত্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন আসামিরা। হাজিরা শেষে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের ঘিরে ফেলে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা হয়ে দাঁড়ান আইনজীবী।
জোর করে নিয়ে যেতে চাইলে আইনজীবীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় ডিবির। পরে এক আইনজীবীসহ দুই আসামিকে হেফাজতে নেয় ডিবি। গতকাল বুধবার (১৮ জুন) বেলা তিনটার দিকে ময়মনসিংহ আদালতপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই আইনজীবীর নাম রাসেল তালুকদার। গৌরীপুরে ২০১৮ সালের একটি হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী তিনি। মামলার আটজন আসামির সবাই জামিনে আছেন বলে তিনি জানান।
রাসেল তালুকদার বলেন, শুনানি শেষে মক্কেলদের নিয়ে তিনি আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের সামনে গেলে সাদাপোশাকে ডিবি পুলিশের একটি দল আসামিদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তিনি বাধা দিয়ে বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া কাউকে এভাবে নিয়ে যেতে পারে না। কিন্তু তারা কোনো কথা শোনেনি। এ সময় ধস্তাধস্তি করে তাঁকে লাঞ্ছিত করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডিবি হেফাজতে নেওয়া অন্য দুজন হলেন মো. লিয়ন সরকার (২৫) ও তাঁর ছোট ভাই রিপন সরকার (২২)। তাঁদের বাড়ি গৌরীপুরের সিধলা ইউনিয়নের হাসনপুর গ্রামে। হত্যা মামলায় ২ নম্বর আসামি তিনি।
আরও পড়ুন : হাইকোর্টের দুই বিচারপতির ছুটি বাড়ল, বিচারিক কার্যক্রম থেকে বাদ
এদিকে আইনজীবীর সঙ্গে ডিবির ধস্তাধস্তির ঘটনায় উপস্থিত লোকজন ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, আইনজীবীর মক্কেলদের টানাহেঁচড়া করছেন সাদাপোশাকের একদল পুলিশ সদস্য। ডিবি লেখা কোটি পরা কয়েকজন সদস্যও ছিলেন। আইনজীবী বাধা দিতে চাইলে তাঁকেও কয়েকজন আটকানোর চেষ্টা করা হয়। পরে আইনজীবীকে ধরে টেনে ডিবি কার্যালয়ের দিকে নিতে দেখা যায়।
পরে ময়মনসিংহ আইনজীবী সমিতির একটি দল ডিবি কার্যালয়ে যায়। পরে আলোচনা শেষে বিকেল চারটার দিকে ডিবি হেফাজত থেকে আইনজীবীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : সাবেক স্ত্রীর মামলায় কারাগারে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যসচিব সৈয়দ সাদউদ্দিন আহমেদ বলেন, একজন আসামিকে পুলিশ ধরতে চাইলে আইনজীবীর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা ও ভুল–বোঝাবুঝি হয়। পরে তাঁরা ডিবি পুলিশের কাছে গিয়ে আলোচনা করে আইনজীবীকে নিয়ে এসেছেন।
জেলা ডিবির ওসি মহিদুল ইসলাম বলেন, লিয়ন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাঁকে আটক করা হয়েছে। কোনো একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। আজ ঘটনার সময় তাঁর ভাইও সঙ্গে থাকায় তাঁকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিষয়েও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘লিয়নকে ধরার সময় আইনজীবী বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় বাধ্য হয়ে আইনজীবীকেও আমাদের নিয়ে আসতে হয়েছিল। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’