মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : কিশোরী অপহরণের মামলায় ৩ জন অপহরণকারীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৫ জুন) কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ওসমান গণি এ রায় ঘোষণা করেন।
একই আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মীর মোশাররফ হোছাইন টিটু এ তথ্য জানিয়েছেন।
দন্ডিত আসামীদের পরিচয় : জাফর আলম (২০), পিতা-মনির আহমদ প্রকাশ বাইট্যা, শফি আলম (২৫), পিতা-মনির আহমদ প্রকাশ মনু এবং বাবুইয়া (২৫), পিতা-হাছন আলী। তারা সকলেই কক্সবাজারের রামু উপজেলার পূর্ব জোয়ারিয়া নালা গ্রামের বাসিন্দা। দন্ডিত আসামীরা সকলেই পলাতক রয়েছেন।
মামলার পটভূমি
২০০৫ সালের ২২ মার্চ রাত দেড়টার দিকে দন্ডিত আসামীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কক্সবাজারের রামু উপজেলার পূর্ব জোয়ারিয়া নালা গ্রামের গোলাম হোছনের বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে গোলাম হোছনের ১৬ বছর কন্যা লায়লা বেগমকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহৃতাকে আসামীরা বেদম মারধর করে। এ ঘটনায় দন্ডিত ৩ জন সহ ৪ অপহরণকারীকে আসামী করে গোলাম হোছন বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রামু থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার রামু থানা মামলা ২১, তারিখ : ২৩/০৩/২০০৫ ইংরেজি। জিআর মামলা নম্বর : ৫০/২০০৫ (রামু)। যার নারী মামলা নম্বর : ৫০/২০১৮ ইংরেজি।
বিচার প্রক্রিয়া
মামলাটি কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে তাদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য্য করা হয়।
রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ওসমান গণি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ও ৭/৩০ ধারায় আসামী জাফর আলম, শফি আলম এবং বাবুইয়াকে দোষী সাব্যস্থ করে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন।
পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মীর মোশাররফ হোছাইন টিটু জানান, রাষ্ট্র পক্ষে তিনি আদালতের দায়িত্ব নেওয়ার পর পুরাতন ও স্পর্শকাতর মামলা গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্র পক্ষ ২০ বছর আগের এ মামলাটি বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ শামীম জানান, দন্ডিত আসামরীরা পলাতক রয়েছে। বিজ্ঞ বিচারকের প্রদত্ত রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দন্ডিত আসামীদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, দন্ডিত আসামীরা যেদিন গ্রেপ্তার হবেন অথবা আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন, সেদিন থেকে দন্ডের মেয়াদ শুরু হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।