কক্সবাজারে দেড় কোটি টাকা মূল্যের এক কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস) পাচারের মামলায় এক রোহিঙ্গা যুবককে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আব্দুল মজিদ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা আদালতের নাজির বেদারুল আলম।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মোঃ হামিদ (১৯)। তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার লেদা নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শরণার্থী। তার পিতার নাম মৃত হোসন এবং মাতার নাম মাহমুদা খাতুন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। আসামির পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট রাশেদুর রহমান রুবেল।
মামলার পটভূমি
২০২১ সালের ৮ মে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটের দিকে, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া জেলের ঘাটা এলাকায় র্যাব-১৫ এর একটি টিম অভিযান চালিয়ে মোঃ হামিদকে আটক করে।
তার হাতে থাকা একটি শপিং ব্যাগ থেকে এক কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস) উদ্ধার করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।
ঘটনার দিন র্যাব-১৫ এর ডিএডি কৃঞ্চপদ ভৌমিক বাদী হয়ে মোঃ হামিদের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৩৮, তারিখ : ০৮/০৫/২০২১ ইংরেজি, যার জিআর মামলা নম্বর : ৩৫৫/২০২১ ইংরেজি (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ১৩১০/২০২২ ইংরেজি।
বিচার প্রক্রিয়া
মামলাটি বিচারের জন্য ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীর পক্ষে তাদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা, আসামীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য্য করা হয়।
রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আব্দুল মজিদ ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ১০(গ) ধারায় মামলার আসামী মোঃ হামিদকে দোষী সাব্যস্থ করে তাকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদন্ড, একইসাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসাইন জানান, দন্ডিত আসামী মোঃ হামিদকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।