চট্টগ্রামের রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজাম উদ্দিন হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) চট্টগ্রাম মহানগর আদালত এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের লালদিঘীপাড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন হেফজখানায় পড়ুয়া ২১ বছর বয়সী নিজাম উদ্দিন।
সেই কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গুলি চালায় বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে। গুলিতে নিজাম উদ্দিন মারা যান।
প্রায় ১১ মাস পর, ২০২৫ সালের ১ জুলাই নিজামের বাবা সাহাবউদ্দিন কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সরাসরি আসামি করা হয় সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীকে।
এজাহারে সাহাবউদ্দিন উল্লেখ করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট নগরের লালদিঘীপাড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন তার হেফজখানায় পড়ুয়া ২১ বছর বয়সী ছেলে নিজাম উদ্দিন।
হাজার হাজার ছাত্র-জনতার অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এতে তার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
ঘটনার বিস্তারিত অবগত হয়ে পরিবার ও চট্টগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা করে এজাহার দায়ের করতে দেরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তে ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে বিজিবি ফজলে করিম চৌধুরীকে আটক করে।
পরে তাকে আখাউড়া থানার মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর হেলিকপ্টারযোগে তাকে চট্টগ্রামে আনা হয়।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় এক ডজনের বেশি মামলা রয়েছে।
অভিযোগের মধ্যে রয়েছে: হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো, অস্ত্রের মুখে জমি লিখিয়ে নেওয়া, ভাঙচুর, দখলের ঘটনা।
এছাড়াও রাউজানের গহিরার নিজ বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাতেও মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।