নরসিংদী জেলা কারাগারে সশস্ত্র হামলার এক বছর পার হলেও এখনও পলাতক রয়েছেন ১২২ জন আসামি। একইসঙ্গে লুট হওয়া ৩৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬ হাজারেরও বেশি গুলি উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের’ সময় এই নজিরবিহীন হামলার ঘটনা ঘটে। ওইদিন সন্ধ্যায় সশস্ত্র হামলাকারীরা নরসিংদী জেলা কারাগারে ঢুকে ৮২৬ জন বন্দীকে ছিনিয়ে নেয়। লুট করে নেয় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় ৮ হাজার রাউন্ড গুলি। একইসঙ্গে পুড়িয়ে ফেলে ২৯ হাজার মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর ৮২৬ বন্দীর মধ্যে ৬৪৬ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। পলাতক ১৮০ জনের মধ্যে ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এখনও ১২২ জন ফেরারি।
হামলার সময় লুট হওয়া ৮৫টি অস্ত্রের মধ্যে মাত্র ৫১টি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকী ৩৪টি অস্ত্র ও ৬ হাজার গুলির খোঁজ এখনো মেলেনি।
হামলার পর কিছুদিন আশপাশের জেলা কারাগারে বন্দীদের পাঠানো হলেও বর্তমানে মেরামতের পর পুরোদমে চলছে নরসিংদী জেলা কারাগারের কার্যক্রম। ৩৪৪ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন কারাগারে এখন রাখা হচ্ছে ৯০০ জনের বেশি বন্দী।
কারাগারের ভবনগুলো আংশিক মেরামত করা হলেও এখনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। পলেস্তারা খসে পড়ছে, দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল।
নরসিংদী জেল সুপার মো. শামীম ইকবাল জানান, হামলায় ২৯ হাজার মামলার নথিপত্র পুড়ে যাওয়ায় বন্দীদের মামলার ধরন, সাজাভোগের সময় ও পরিচয় শনাক্ত করতে সমস্যা হচ্ছে। আদালতের সহায়তায় ও প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।
এদিকে নরসিংদী শহরের বাইরে শিবপুরের কামারগাঁও এলাকায় আধুনিক কারাগার নির্মাণের কাজ চলছে। ২০ একর জায়গাজুড়ে নির্মিত এই কারাগারে থাকবে এক হাজার বন্দীর ধারণক্ষমতা।
অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তি সুবিধাসম্পন্ন কারাগারটি ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে চালু হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।