মো. ফয়জুল হক
মো. ফয়জুল হক

ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৭ ধারা : সিআর মামলায় ফরিয়াদির প্রতি অন্যায় চাপ

ভূমিকা

১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৭ ধারার পুনঃবিবেচনা অর্থাৎ Complaint Register Case (সি.আর) মামলায় বাদীর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক হওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে। বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় এখনো একটি অদ্ভুত বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে—তা হলো General Register Case জি.আর (GR) মামলার সাথে Complaint Register Case সি.আর (CR) মামলার আচরণগত পার্থক্য।

জি.আর মামলায়, যেখানে মামলা পুলিশ তদন্ত করে, সেখানে সংবাদদাতাকে কেবলমাত্র সাক্ষ্য দেওয়ার সময় আদালতে আসতে হয়। কিন্তু সি.আর মামলায়, যেটি একজন ব্যক্তি নিজে আদালতে দায়ের করে, সেখানে ফরিয়াদিকে প্রতিটি তারিখে আদালতে উপস্থিত থাকতে হয়। অন্যথায়, কার্যবিধির ২৪৭ ধারার আওতায় মামলা খারিজ হয়ে যেতে পারে। এই লেখায় যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, এই বাধ্যবাধকতা অবাস্তব, হয়রানিকর এবং এটি সংশোধন করা একান্ত প্রয়োজন।

আইনি কাঠামো: ২৪৭ ধারার পরিসর

কার্যবিধির ২৪৭ ধারার মূল বক্তব্য হচ্ছে যে, ‘যদি বিজ্ঞ আদালত সমন জারির পর ফরিয়াদি, চূড়ান্ত আদেশ হওয়ার পূর্বে, অনুপস্থিত থাকেন এবং ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করেন যে তার অনুপস্থিতির কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণে ধার্য তারিখের শুনানি মুলতবি না রাখা হয়, তবে তিনি আসামিকে খালাস দেবেন।’ এই ধারা হয়তো একসময় ব্যক্তিগত অভিযোগ মামলায় ফরিয়াদির দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে সহায়ক ছিল, কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় এটি সাধারণ জনগণের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে, বিশেষ করে যারা আইন সম্পর্কে ধারণাহীন।

আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধিটি প্রণয়ন করা হয় ১৮৯৮ সালে। ১৮৯৮ সালের প্রেক্ষাপট আর ২০২৫ সালের প্রেক্ষাপট সময়ের পরিক্রমায় একটি শতকের পরিবর্তন হয়েছে। একজন ভিক্টিম আদালতে মামলা দায়ের করে বছরের পর বছর আদালতে দৌড়াইতে হয়। এতে করে ভিক্টিম বিচারের আশায় আবার সিস্টেমের ভিক্টিম হয়ে যাচ্ছে। এতে করে বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা দিনে দিনে সংকোচিত হতে থাকে। বদনাম হয় আদালত ও আদালত সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি ব্যক্তির। কারণ কোনো ব্যক্তি যদি মনে করেন যে তিনি কোথাও ন্যায় পাচ্ছেন না, তখনই সেই ব্যক্তি আদালতের উপর পূর্ণ আস্থা রেখে বলেন, ‘SEE YOU IN THE COURT’।

জি.আর মামলায় সংবাদদাতার উপস্থিতি

একটি জি.আর মামলা শুরু হয় সংশ্লিষ্ট থানায় অর্থাৎ পুলিশ স্টেশনে এজাহার দায়েরের মাধ্যমে। যিনি কোনো একটি আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ লিখিত বা মৌখিকভাবে থানায় কার্যবিধির ১৫৪ ধারা মতে এজাহার দায়ের করেন তখন সেই ব্যক্তিকে বলা হয় সংবাদদাতা। তখন উক্ত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাংলাদেশ পুলিশ ফরম নং- ২৭ মতে এফ.আই.আর ফরম সম্পাদন করে সংশ্লিষ্ট জেলার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জি.আর শাখায় এফ.আই.আর সহ এজাহারের এক কপি প্রেরণ করবেন।

উক্ত জি.আর শাখার একটি স্বতন্ত জি.আর নাম্বার এফ.আই.আর ফরমে সংযুক্ত থাকবে এবং তখন আমরা এই মামলাকে জি.আর মামলা বলে থাকি। জি.আর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হওয়া পর্যন্ত একজন সংবাদদাতা উপস্থিতি শুধুমাত্র এজাহার দায়ের পর্যন্ত। কেননা সংবাদদাতাকে অবশ্যই বাধ্যতামূলকভাবে থানায় উপস্থিত হয়ে এজাহার দায়ের করতে হবে।

টেলিগ্রামের বাধ্যমে কোনো প্রাপ্ত সংবাদ কার্যবিধির ১৫৪ ধারা তৎসহ ১৯৪৩ সালের পুলিশ রেগুলেশন বাংলাদেশ এর রেগুলেশন নং- ২৪৩(ই) মোতাবেক আইনত কোনো এজাহার নয়। বাকি কাজ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক কাজ। এর পরবর্তীতে আদালত সংবাদদাতার উপস্থিতির জন্য বিশেষ আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত; বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য প্রদান ছাড়া সংবাদদাতার উপস্থিতি মামলার কার্যক্রমের কোনো স্তরেই বাধ্যতামূলক নয়। কেননা কার্যবিধির ৩৫৩ ধারায় বলা হয়েছে যে,

আদালতে আসামীর উপস্থিতি কোনো কারণে মওকুফ করা না হলে আসামীর উপস্থিতিতেই সাক্ষ্য প্রদান করিতে হইবে।

অর্থাৎ সংবাদদাতা সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য প্রদান করিতে চাহিলে তাহাকে বাধ্যতামূলকভাবে আদালতে থাকতে হবে।

এখন সংবাদদাতা যদি ২০২০ সালের ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্ত ব্যবহার আইন’ এর মাধ্যমে দূরবর্তী স্থান থেকে সাক্ষ্য প্রদান করতে চায় তাহলে কতিপয় শর্ত পালনে তাহার ভার্চুয়াল উপস্থিতি আদালতে স্বশরীরে আদালতের উপস্থিতি গণ্য করা হবে। তবে এই ক্ষেত্রেও কার্যবিধির ৩৫৩ ধারার পদ্ধতি অর্থাৎ আসামীর উপস্থিতির বিধান ক্ষুণ্ণ হবে না। অর্থাৎ একটি জি.আর মামলায় তদন্তের এবং মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন রাষ্ট্র।

আরও পড়ুন : মিথ্যা মামলাকারী বাদী ও সাক্ষীর বিরুদ্ধে কিভাবে মানহানি মামলা করবেন?

তদন্তাধীন অবস্থায় রাষ্ট্রের পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন তদন্ত সংস্থা এবং বিচারিক কার্যে মামলা পরিচালনার রাষ্ট্রের পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত পাপলিক প্রসিকিউটর (পিপি)। সংবাদদাতার কেবল মাত্রএজাহার দায়েরে থানায় এবং সাক্ষ্য দেওয়ার সময় আদালতে অর্থাৎ দুই (২) বার বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিতি ছাড়া আর কোনো কার্যক্রমে বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকার বিধান নেই, যদিনা বা সংবাদদাতা স্বেচ্ছায় বা আদালতের অনুমতি স্বাপেক্ষে তাহার নিযুক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে উপস্থিত থাকেন।

তবে, কোনো সংবাদদাতা যদি কোনো প্রতিবেদন বা আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে সংশ্লিষ্ট আদালত বা উচ্চ আদালতে উক্ত প্রতিবেদন বা আদেশকে চ্যালেঞ্জ করতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই উক্ত আদালতে উপস্থিত হয়ে দরখাস্ত দায়ের করে চ্যালেঞ্জ করতে হবে, যদি না বা পাবলিক প্রসিকিয়টর উক্ত প্রতিবেদন চ্যালেঞ্জে সম্মত না হন বা যথাযত কার্যক্রম গ্রহণ না করেন। যেমন, কোনো সংবাদদাতা যদি কোনো তদন্ত প্রতিবেদনে সংক্ষুব্ধ হন তাহলে তাকে আমলি আদালতে উপস্থিত হয়ে কার্যবিধির ২০০ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে না-রাজি দরখাস্ত দায়ের স্বাপেক্ষে উক্ত প্রতিবেদকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে।

আবার যদি আসামীকে চার্জ শুনানির পর বিজ্ঞ আদালত অব্যহতি প্রদান করেন এবং এতে সংবাদদাতা সংক্ষুব্ধ হয়ে উচ্চ আদালতে উক্ত আদেশকে আদেশকে চ্যালেঞ্জ করতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই উক্ত আদালতে উপস্থিত হয়ে এফিডেভিট সহ দরখাস্ত দায়ের করে চ্যালেঞ্জ করতে হবে, যদি না বা পাবলিক প্রসিকিউটর উক্ত প্রতিবেদন চ্যালেঞ্জে সম্মত না হন বা যথাযত কার্যক্রম গ্রহণ না করেন। কিন্তু মামলার মৌলিক কার্যক্রমে সংবাদদাতাকে ২ বারের বেশি উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতা ফৌজদারি কার্যধারায় বর্ণিত হয় নাই।

সি.আর মামলায় ফরিয়াদির উপস্থিতি

যখন কোনো মামলা সরাসরি আমলী আদালতে কার্যবিধির ২০০ ধারায় জবানবন্দি প্রদান স্বাপেক্ষে দরখাস্ত আকারে দায়ের করা হয় তখন তাকে বলায় হয় Complaint Register Case সি.আর (CR)  কেইস/মামলা। যিনি ২০০ ধারার জবানবন্দি প্রদানে সি.আর মামলা দায়ের করেন তাকে বলা হয় ফরিয়াদি। সি.আর মামলার পুরো দায়ভার ফরিয়াদির কাঁধে। তাকে অভিযোগ দাখিল, সাক্ষীহাজির, সময় প্রার্থনা—সবকিছু পরিচালনা করতে হয়। একটি সি.আর মামলা ২০০ ধারায় জবানবন্দি প্রদানে মামলা দায়েরের পর সমন জারি হওয়া পর্যন্ত নিম্নোক্ত কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে যেখানে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলকঃ-

ক)    তদন্ত;

খ)    অনুসন্ধান;

গ)    তদন্ত বা অনুসন্ধান প্রতিবেদন শুনানি;

ঘ)     সমন জারির আবেদন শুনানি;

কার্যবিধির ২৪৭ ধারা মতে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

ঙ)     গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন শুনানি;

চ)     ক্রুক ও হুলিয়া জারির আবেদন শুনানি;

ছ)     পত্রিকা প্রকাশের আবেদন শুনানি;

জ)    চার্জ শুনানি;

ঝ)    ফরিয়াদির সাক্ষী;

ঞ)   কার্যবিধির ৩৪২ ধারার পরীক্ষায়;

ট)     সাফাই সাক্ষী;

ঠ)     যুক্তিতর্ক এবং

ড)    রায়।

তদন্তে ফরিয়াদির বাধ্যতামূলক তদন্ত সংস্থার নিকট উপস্থিতি

কার্যবিধির ২০০ ধারায় ফরিয়াদির জবানবন্দি গ্রহণের পর আমলী আদালতের যদি মনে হয় ঘটনার সঠিকটা নিরূপণে বা অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কোনো আলামত উদ্ধারে তদন্ত হওয়া উচিৎ, সেই ক্ষেত্রে বিজ্ঞ আমলী আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ না করে এবং কার্যবিধির ২০৪ ধারায় আসামীর বিরুদ্ধে কোনো প্রসেস জারি না করে কার্যবিধির ২০২(১) তৎসহ ১৫৬(৩) ধারা মোতাবেক মামলাটি তদন্তে প্রেরণের ক্ষমতা রাখেন। উক্ত তদন্তের আদেশ প্রাপ্ত হয়ে তদন্ত কর্মকর্তা কার্যবিধির ১৬১ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্য ফরিয়াদির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে এবং কার্যবিধির ১৭০(২) ধারা মোতাবেক ফরিয়াদিকে তদন্ত কর্মকর্তা বরাবর সিকিয়রিটি প্রদান করিবেন যে তিনি যথাযত আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন। অর্থাৎ তদন্তের স্বার্থে এবং ফরিয়াদির দাবিকৃত অভিযোগের সত্যতা নিরূপণে তদন্তে সহযোগিতায় তদন্ত কর্মকর্তা বরাবর ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।

অনুসন্ধানে ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

কার্যবিধির ২০০ ধারায় ফরিয়াদির জবানবন্দি গ্রহণের পর আমলী আদালতের যদি মনে হয় ঘটনার সঠিকটা নিরূপণে অনুসন্ধান (Inquiry)এরপ্রয়োজনীয়তাআছেতাহলেফরিয়াদির ও/বা উপস্থিত সাক্ষীদের কার্যবিধির ২০০ ধারায় জবানবন্ধি গ্রহণ করে আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ না করে এবং কার্যবিধির ২০৪ ধারায় আসামীর বিরুদ্ধে কোনো প্রসেস জারি না করে কার্যবিধির ২০২(১) ধারা অনুযায়ী অনুসন্ধানে প্রেরণ করতে পারেন। উল্লেখ্য, ২০২(১) তৎসহ ৪(কে) ধারা অনুযায়ী অনুসন্ধান করবেন শুধুমাত্র অধস্তন ১ম বা ২য় শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট। অনুসন্ধানকালে ম্যাজিস্ট্রেট কার্যবিধির ২০২ (২এ) তৎসহ ১৮৭৩ সালের ওথ এক্ট অনুযায়ী শপত গ্রহণ পূর্বক ফরিয়াদি সহ মামলা সংশ্লিষ্ট সকল সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন। অর্থাৎ এই ক্ষেত্রেও ফরিয়াদিরকে অনুসন্ধানকারী ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।

তদন্ত বা অনুসন্ধান প্রতিবেদন শুনানিতে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

সি.আর মামলার তদন্ত বা অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রদানের পর আমলী আদালত উক্ত প্রতিবেদন শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন এই কারণে যে ফরিয়াদির উক্ত প্রতিবেদনের প্রতি এক মত পোষণ করেন নাকি দ্বি-মত পোষণ করেন। এই ক্ষেত্রেও ফরিয়াদিকে বিজ্ঞ আমলী আদালতে বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত হয়ে প্রতিবেদন বিষয়ে শুনানিঅন্তে মত প্রকাশ করতে হয়। ফরিয়াদির উক্ত শুনানির পর বিজ্ঞ আদালত বিবেচনা করবেন যে প্রতিবেদন গ্রহণ পুর্বক অপরাধ গ্রহণ করবেন নাকি প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্ত/অনুসন্ধানে প্রেরণ করবেন।

সমন জারির শুনানিতে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

বিজ্ঞ আমলী আদালত কর্তৃক অপরাধ আমলে গ্রহণ করার পর আদালত কার্যবিধির ২য় তফসিলের ৪র্থ কলামের সমন তালিকাভুক্ত অপরাধের জন্য সমন জারির আদেশ দিবেন। এই ক্ষেত্রে ফরিয়াদিকে বাধ্যতামূলকভাবে শুনানিতে অংশগ্রহণ করে সমন জারির জন্য প্রসেস ফি দাখিল করতে হয়। অন্যথায় সমন জারি করা হয় না।

গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির শুনানিতে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

সমন যথাযত জারি হওয়ার পরও যদি আসামী আদালতে উপস্থিত না হন, পরবর্তী ধার্য তারিখে ফরিয়াদিকে বিজ্ঞ আমলী আদালতে উপস্থিত থেকে অবশ্যই আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির আবেদন শুনানি করতে হয় এবং একই সাথে পরোয়ানা জারির জন্য প্রসেস ফি দাখিল করতে হয়। উক্ত কার্যক্রমে ফরিয়াদির অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত কার্যবিধির ২৪৭ ধারা অনুযায়ী মামলা খারিজ করে আসামীকে খালাস প্রদান করতে পারেন।

ক্রোক ও হুলিয়া জারির আবেদন শুনানিতে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হওয়ার পরও যদি আসামীকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হয় তাহলে ফরিয়াদিকে বিজ্ঞ আমলী আদালতে উপস্থিত হয়ে কার্যবিধির ৮৭ ও ৮৮ ধারা মতে আসামীর স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও আসামীর হুলিয়া জারির আবেদন শুনানি করতে হয় এবং তৎসহিত প্রসেস ফি দাখিল করতে হয়। উক্ত কার্যক্রমে ফরিয়াদির অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত কার্যবিধির ২৪৭ ধারা অনুযায়ী মামলা খারিজ করে আসামীকে খালাস প্রদান করতে পারেন।

পলাতক আসামীর জন্য পত্রিকা প্রকাশের আবেদন শুনানিতে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

আসামীর বিরুদ্ধে ক্রুক ও হুলিয়া জারির প্রতিবেদন দাখিল হওয়ার পরও যদি আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থিত করা সম্ভব না হয় তাহলে ফরিয়াদিকে বিজ্ঞ আমলী আদালতে উপস্থিত হয়ে কার্যবিধির ৩৩৯বি ধারা অনুযায়ী ২টি জাতীয় প্রত্রিকায় পলাতক আসামীর উপস্থিতি সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য আবেদন শুনানি করতে হয়। উল্লেখ্য যে, উক্ত পত্রিকা প্রকাশের জন্য সকল খরচ ফরিয়াদিকেই বহন করতে হয়। উক্ত কার্যক্রমে ফরিয়াদির অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত কার্যবিধির ২৪৭ ধারা অনুযায়ী মামলা খারিজ করে আসামীকে খালাস প্রদান করতে পারেন।

চার্জ শুনানিতে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

পত্রিকা বিজ্ঞপ্তির পর মামলাটি বিচারের জন্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হয়। বিচারিক আদালতের প্রথম ধার্য তারিখ হচ্ছে অপরাধীর চার্জ বিষয়ে শুনানি। উক্ত শুনানিতে ফরিয়াদিকে বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকতে হয়। উক্ত কার্যক্রমে ফরিয়াদির অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত কার্যবিধির ২৪৭ ধারা অনুযায়ী মামলা খারিজ করে আসামীকে খালাস প্রদান করতে পারেন।

সাক্ষীর সময় ফরিয়াদির উপস্থতিত বাধ্যতামূলক

আসামীর বিরুদ্ধে কার্যবিধির ২৪২ ধারায় চার্জ গঠন করার পর আসামী যদি নিজেকে নির্দোষ ঘোষিত করেন তাহলে উক্ত মামলাটি সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১৩৫, ১৩৭ এবং ১৩৮ ধারা অনুযায়ী প্রথমে ফরিয়াদি পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করতে হয়। ফরিয়াদির নিজ সাক্ষ্য ছাড়া মামলা প্রমাণ সম্ভব নয়। তাই ফরিয়াদিকে বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থেকে সাক্ষ্য প্রদান করতে হয়। যদি আসামী জেল হাজতে থাকে তাহলে অবশ্যই কার্যবিধির ৩৫৩ ধারা অনুযায়ী আসামীর উপস্থিতিতে ফরিয়াদির সাক্ষ্য প্রদান করতে হবে। উক্ত কার্যক্রমে ফরিয়াদির অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত কার্যবিধির ২৪৭ ধারা অনুযায়ী মামলা খারিজ করে আসামীকে খালাস প্রদান করতে পারেন।

কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামীর পরীক্ষায় ফরিয়াদির উপস্থতিতি বাধ্যতামূলক

বিচারে যদি আসামী উপস্থিত থাকে তাহলে ফরিয়াদি পক্ষে সকল সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদানের পর কার্যবিধির ৩৪২ ধারা অনুযায়ী আসামীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ বিষয়ে বিজ্ঞ বিচারিক আদালত পরীক্ষা করে থাকেন এবং আসামীর কাছ থেকে উক্ত অভিযোগ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে থাকেন। উক্ত কার্যক্রমে ফরিয়াদির অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত কার্যবিধির ২৪৭ ধারা অনুযায়ী মামলা খারিজ করে আসামীকে খালাস প্রদান করতে পারেন।

সাফাই সাক্ষীতে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

কার্যবিধির ৩৪০ ধারা মতে প্রত্যেক আসামীর অধিকার রয়েছে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ খণ্ডনে সাফাই সাক্ষ্য প্রদান করার এবং উক্ত বিচারে আসামী নিজেই একজন যোগ্য সাক্ষী হিসেবে বিবেচিত হইতে পারে। ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১৩৫, ১৩৭ এবং ১৩৮ ধারা অনুযায়ী ৩৪২ ধারায় পরীক্ষার পর আসামীর পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য প্রদান করা হয়ে থাকে। উক্ত কার্যক্রমে ফরিয়াদির অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত কার্যবিধির ২৪৭ ধারা অনুযায়ী মামলা খারিজ করে আসামীকে খালাস প্রদান করতে পারেন।

যুক্তিতর্কে ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

যদিও কার্যবিধির ৬ষ্ঠ ভাগের ২০তম অধ্যায় ম্যাজিস্ট্রেট বিচারে সরাসরি ২২তম অধ্যায়ে দায়রা বিচারে ২৬৫জে ধারার মতো যুক্তিতর্কের বিধান নেই, তারপরেও কতিপয় যুক্তিযুক্ত কারণে ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে ম্যাজিস্ট্রেট বিচারেও যুক্তিতর্ক গ্রহণ করা হয়ে থাকে। ম্যাজিস্ট্রেট বিচারে যুক্তিতর্কের বিধান যেমন হতে পারে সংবিধানের ৩৫(৩) অনুচ্ছেদ এবং কার্যবিধির ২৪৩, ২৪৭, ৩৫৪ ধারাসমূহ।

আবার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যুক্তিতর্ক একটি Practical Convention ওবলাযায়।উক্ত কার্যক্রমেও ফরিয়াদির অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত কার্যবিধির ২৪৭ ধারা অনুযায়ী মামলা খারিজ করে আসামীকে খালাস প্রদান করতে পারেন।

রায়ের দিন ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক

সি.আর মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট বিচারিক আদালতে রায়ের দিনেও ফরিয়াদির অনুপস্থিতে বিজ্ঞ আদালত কার্যবিধির ২৪৭ ধারা অনুযায়ী মামলা খারিজ করে আসামীকে খালাস প্রদান করতে পারেন।

সি.আর মামলায় যখন ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়

যদি কোনো সি.আর মামলা কোনো আদালত কর্তৃক দায়ের করা হয় অথবা কোনো সরকারী কর্মকর্তা কর্তৃক তার দায়িত্ব পালনের হেতুতে দায়ের করা হয় তখন উক্ত ফরিয়াদিকে বিজ্ঞ আমলী আদালতে উপস্থিত হয়ে ২০০ ধারার জবানবন্দি হতে কার্যবিধির ২০০ (এএ) ধারা মতে ফরিয়াদির উপস্থিতিকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। উক্ত ফরিয়াদির লিখিত অভিযোগই ২০০ ধারার জবানবন্দি হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।

আবার এর পরবর্তী সকল বিচারিক কার্যক্রম থেকেও ২৪৭(প্রোভাইসু) ধারা মতে ফরিয়াদি যদি সরকারী কর্মচারি হন তাহলে বিজ্ঞ আদালত ফরিয়াদির উপস্থিতিকে অব্যহতি দিতে পারেন। এই কারণে ফরিয়াদির অনুপস্থিতির জন্য মামলার কোনো প্রকার ক্ষতি হবে না।

যেই কারণে ফরিয়াদির বাধ্যতামূলক উপস্থিতির প্রয়োজনীয়তা নেই

একজন নাগরিক তার নিজের মামলা নিজে পরিচালনা করার অধিকার থাকলেও আইনগত বিষয়ে উক্ত ব্যক্তি পারদর্শি না হওয়ায় তিনি একজন বিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ করে থাকেন। The Legal Bangladesh Practitioners and Bar Council Order, 1972 and The Bangladesh Legal Practitioners and Bar Council Rules, 1972 আইন অনুযায়ী একজন বিজ্ঞ আইনজীবী যেকোনো আদালতে একজন ব্যক্তিকে প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষমতারাখেন। অর্থাৎ বিজ্ঞ আইনজীবীর বক্তব্য ও উপস্থিতিই উক্ত ব্যক্তির বক্তব্য ও উপস্থিতি হিসেবে বিবেচিত হবে।

আমরা দেখতে পাই যে, কার্যবিধির ২০০ ধারার জবানবন্দি, তদন্ত/অনুসন্ধান কর্মকর্তাকে তদন্তে/অনুসন্ধানে সহযোগিতা এবং সাক্ষ্য প্রদানে উপস্থিতি ছাড়া একজন ফরিয়াদির আর কোনো কার্যক্রমের উপস্থিতির প্রয়োজন নেই। কেনোনা বাকি সকল ক্ষেত্রেই ফরিয়াদির পক্ষে তার নিযুক্ত বিজ্ঞ আইনজীবী সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। ফরিয়াদি শুধুমাত্র একটি স্তম্ভ হিসেবে আদালতে উপস্থিত থাকেন। তাকে কোনো প্রকার কাজেই অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা পড়েনা।

আমরা যদি দেখি যে, আদালত বা সরকারী কর্মকর্তা দ্বারা দায়েরকৃত মামলায় ফরিয়াদিকে কোনো কার্যক্রমেই বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিতির প্রয়োজন হয়না। কেননা তাদের পক্ষে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত বিজ্ঞ পিপি মহোদয় মামলা পরিচালনা করে থাকেন। যেহেতু অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিজ্ঞ আদালতে ফরিয়াদির উপস্থিতির প্রয়োজনীয়তা নেই সেহেতু প্রতি তারিখে ফরিয়াদির উপস্থিতি এক প্রকার হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

যদি সরকারি কর্মকর্তার ক্ষেত্রে ফরিয়াদির উপস্থিতি ছাড়াও মামলা পরিচালিত হতে পারে তাহলে বেসরকারি ব্যক্তির ক্ষেত্রেও তার নিযুক্ত বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমেও মামলা পরিচালিত হতে পারে। এই ব্যবধান বিচারপ্রার্থীদের জন্য এক ধরনের বৈষম্য তৈরি করে, যা ন্যায়বিচারের মৌলিকনীতিকে লঙ্ঘন করে। শুধুমাত্র কার্যবিধির ২৪৭ ধারায় ফরিয়াদির উপস্থিতি বাধ্যবাধকতার জন্য ফরিয়াদিকে প্রতি তারিখেই বিজ্ঞ আদালতে উপস্থিত থাকতে হয়।

ভারতে ২৪৭ ধারার সদৃশ ধারা ২৫৬ রয়েছে। ভরতের ১৯৭৩ ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ২৫৬ (প্রুভাইসু) অনুযায়ী ফরিয়াদির পরিবর্তে তাহার নিযুক্ত আইনজীবীর উপস্থিতিকে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। আবার পাশ্চাত্য দেশগুলোতেও এখন VICTIM-CENTRIC JUSTICE বা ভুক্তভোগীবান্ধব বিচারনীতি জনপ্রিয় হচ্ছে। সেখানে ব্যক্তিগত অভিযোগ মামলাগুলোতে বাদীকে বারবার আদালতে হাজির না করে অধিকতর নমনীয় পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

ফরিয়াদির বাধ্যতামূলক উপস্থিতির বাস্তব জটিলতা

কার্যবিধির ২৪৭ ধারা মতে ম্যাজিস্ট্রেট বিচারে ফরিয়াদির বিচারের প্রতি তারিখে বাধ্যতামূলক উপস্থিতি কতিপয় জটিলতার সৃষ্টি করেঃ-

ক) অতিরিক্ত হয়রানি : প্রতিটি তারিখে আদালতে হাজির হওয়া সময় ও অর্থের অপচয়। অনেক সময় শুধু তারিখ পরিবর্তনের জন্যই আসতে হয়।

খ) ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চনা : সঠিক অভিযোগ থাকলেও একবার অনুপস্থিত হলেই মামলা ২৪৭ ধারায় খারিজ হয়ে যেতে পারে।

গ) দুর্নীতির সুযোগ : আসামিপক্ষ ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করে বাদীকে ক্লান্ত করে তুলতে পারে, যাতে সে অনুপস্থিত হয় এবং মামলা খারিজ হয়।

ঘ) বিচারে অনাস্থা জন্মানো : আসামীপক্ষ যখন বিভিন্ন কারণে একাধিকবার সময় গ্রহণ করেন তখন ফরিয়াদি শুধুমাত্র একটি বোবা পাখির মতন বিজ্ঞ আদালতে হাজিরা দিতে দিতে এক সময় বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা জন্মায়।

ফরিয়াদির বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিতির বিধানে সংশোধনের প্রস্তাব

যেহেতু কার্যবিধির ২৪৭ ধারায় ফরিয়াদির বাধ্যতামূলক উপস্থিতি আসামীপক্ষের জন্য এক প্রকার হাতিয়ার যার লঙ্ঘন হলেই আসামীপক্ষ ২৪৭ ধারাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিচার থেকে খালাস পেয়ে যায়। যেহেতু ফরিয়াদির পক্ষে এক বা একাধিক বিজ্ঞ আইনজীবী নিযুক্তির মাধ্যমে ফরিয়াদির পক্ষে সকল কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ রয়েছে, তাই শুধুমাত্র যেখানে ফরিয়াদির উপস্থিতিএকান্ত আবশ্যকাতা রয়েছে তাছাড়া বাকি কার্যক্রমে ফরিয়াদির বাধ্যতামূলক উপস্থিতি বিষয়ে ২৪৭ ধারায় কিছু সংশোধন আসা এখন সময়ের দাবি।

সংশোধনসমূহ যেমন হতে পারে

ক)  শুধু প্রয়োজনীয় তারিখে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক হোক, যেমনঃ অভিযোগ দাখিলের সময় (ধারা২০০);

খ)  সাক্ষ্যগ্রহণের সময়;

গ)  বাদীরপক্ষে আইনজীবীর উপস্থিতি স্বীকৃত হোক;

ঘ)  সুনির্দিষ্ট কারণ থাকলে বিচারক যেন মামলা চলমান রাখতে পারেন;

ঙ)  খারিজের আগে নোটিশ প্রদান বাধ্যতামূলক করা হোক;

চ)  প্রথম অনুপস্থিতিতে সরাসরি খারিজ নয়, বরং কারণ দর্শানোর সুযোগ দেওয়া হোক।

উপসংহার

ন্যায়বিচার কেবল প্রতিষ্ঠিত হলেই হয় না, তা নাগালের মধ্যেও থাকতে হবে। ২৪৭ ধারার বর্তমান প্রয়োগ ব্যক্তিগত অভিযোগ মামলার বাদীদের হয়রানির শিকার করে তোলে। অনেক সময় প্রকৃত অপরাধীও এই সুযোগে মুক্তি পেয়ে যায়। অভিযোগকারীকে প্রতি তারিখে পেশাগত, পারিবারিক, স্বাস্থ্যগত বা নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রায় উপস্থিত হওয়া অসম্ভব হয়ে ওঠে। অনেক সময় ফরিয়াদি দূর-দূরান্ত থেকে আসেন, যা সময় ও অর্থ দুটোতেই চাপে ফেলে।

শুধুমাত্র ফরিয়াদির অনুপস্থিতির কারণে মামলা খারিজ হয়ে গেলে এবং আসামী খালাস হয়ে গেলে অপরাধী শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যায় এবং এতে করে বিচার পক্রিয়া ভেঙ্গে পড়ে। এই ডিজিটাল যুগে যখন বিশ্বের সকল কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে হয়ে থাকে সেখানে শুধুমাত্র উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য সনাতনী পদ্ধতির পরিবর্তন সময়ের দাবি।

এজন্য সময় এসেছে এই ধারার ভাষাগত ও ব্যবহারিক সংস্কার করার—যাতে এটি আরও মানবিক, বাস্তবসম্মত ও বিচারবান্ধব হয়।

লেখক : মো. ফয়জুল হক; অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট। ই-মেইলঃ smfayzul@gmail.com