প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

গোপালগঞ্জ সহিংসতা: সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তি

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বনির্ধারিত ‘জুলাই পদযাত্রা’কে কেন্দ্র করে সহিংসতা, জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও হতাহতের ঘটনার তদন্তে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কমিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক বিচারপতি মো. আবু তারিক। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্য কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬–এর সেকশন ৩–এর ক্ষমতাবলে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশনের সদস্যরা হলেন:

  • সাবেক বিচারপতি মো. আবু তারিক (সভাপতি)

  • জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান

  • সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম

  • ২১ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহীদুর রহমান ওসমানী

  • কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক সরদার নূরুল আমিন

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ সিদ্দিকী

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গঠিত কমিশনের উদ্দেশ্য ও দায়িত্ব হচ্ছে—

  • সহিংস ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধান;

  • এনসিপির জনসভায় হামলার পেছনে দায়ী ব্যক্তি বা সংগঠন চিহ্নিত করা;

  • দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সুপারিশ;

  • সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার বিষয় বিশ্লেষণ;

  • ভবিষ্যতে এ ধরনের সহিংসতা রোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ প্রদান।

কমিশন প্রয়োজনবোধে অন্য যে কাউকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ কমিশনের কাজে সাচিবিক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে এবং কমিশনের প্রয়োজনে রাষ্ট্রের যেকোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্বে নিয়োজিত করতে পারবে।

তদন্ত কমিশনকে তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দাখিল করতে বলা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে ঘটনার বিশ্লেষণ, মতামত এবং সুপারিশ স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ঘটনার পটভূমি

প্রেস উইং আরও জানায়, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা সদরে এনসিপির পূর্বঘোষিত জনসভায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও নিষ্ক্রিয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা একযোগে আক্রমণ চালায়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারিসশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা গ্রহণ করা হয়।

এই সহিংসতায় একাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটে এবং জেলার বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে কারাগারও রয়েছে। ফলে তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে ঘটনার পেছনে মূল কারণ অনুসন্ধান এবং দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।