স্ত্রী উদ্ধারে স্বামীর রিট খারিজ
সুপ্রিম কোর্ট, বাংলাদেশ

কুমিল্লার মুরাদনগরে দরজা ভেঙে ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশের প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল

ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে তিনজন গ্রেপ্তার, নিরাপত্তা ও চিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ বাস্তবায়নের তদারকি চলছে

কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে দরজা ভেঙে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার অগ্রগতি ও ভিকটিমের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেছে জেলা পুলিশ। এতে জানানো হয়, ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সরাসরি তত্ত্বাবধানে রয়েছেন এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিনরাত টহল দিচ্ছে থানা পুলিশ।

রোববার (২৭ জুলাই) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে কুমিল্লার পুলিশ সুপার এই প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এর আগে গত ২২ জুলাই আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও প্রতিবেদন দাখিল না করায় কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে ১২ আগস্ট আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঘটনাটি নিয়ে দুইটি মামলা হয়েছে। একটি ধর্ষণের অভিযোগে এবং অন্যটি ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায়। ভিডিও ছড়ানোর ঘটনায় তিনজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঘটনার সূত্রপাত ২৬ জুন রাতে, মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর পাঁচকিত্তা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর ওপর হামলার মাধ্যমে। অভিযুক্ত ফজর আলী (৩৮) ওই নারীর বাবার বাড়িতে গিয়ে দরজা খুলতে বলেন। নারীটি অস্বীকৃতি জানালে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠে।

স্থানীয়দের হাতে আটক হওয়ার পর মারধরের মুখে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। তবে কিছু স্থানীয় ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ভিকটিমের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

পরদিন ২৭ জুন ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিম নিজেই মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু করা হয়। ভিডিও ছড়ানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।

হাইকোর্ট ২৯ জুন ধর্ষণের শিকার ওই নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণে ব্যবস্থা নিতে বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মীর এ কে এম নুরুন্নবী, আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।