ঝালকাঠির আলোচিত রুবেল গাজী হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়ে ফেরার পথে আদালত চত্বরে সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মন্নান মৃধাকে (৫২) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে।
রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত মন্নান মৃধা নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়া গ্রামের মৃত হাতেম মৃধার ছেলে।
জানা গেছে, তিনি মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসেবে রুবেল হত্যা মামলায় কয়েকজন আসামিকে আদালতে চিহ্নিত করেন। পরে আদালত থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হন। হামলাকারীরা তাকে ঘিরে ধরে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে এবং তার মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মন্নান মৃধার চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় আদালতের এজলাসে আশ্রয় নেন। জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং সদর থানাকে দ্রুত মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহেব হোসেন বলেন, “আদালতের ভেতরে এমন হামলা বিচার প্রক্রিয়ার জন্য মারাত্মক হুমকি। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।”
আহত মন্নান বলেন, “আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বের হতেই তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। আমি ন্যায়বিচার চাই।”
রুবেল গাজীর বাবা ও মামলার বাদী জসিম গাজী বলেন, “ছেলেকে হত্যার পর এবার সাক্ষীকেও হত্যার চেষ্টা চলছে, যাতে মামলাটি ধামাচাপা পড়ে যায়।”
২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর নলছিটির কয়া গ্রামে একটি ইটভাটার সামনে রুবেল গাজী (২২) নামের যুবককে কুপিয়ে আহত করা হয়। তিনি ৪ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেলে মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা জসিম গাজী ১৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন। চলতি বছরের ৩ মে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
আসামিরা হলেন: অহিদুল ইসলাম মৃধা, রফিক মৃধা, সোহেল মাঝি, সাইদুল ফকির, সালাম ফকির, এনায়েতুর রহমান, কালাম খান, নাসির খান, এরশাদ হাওলাদার, রবিউল হাওলাদার, বাবুল মৃধা ও সোহরাব মৃধা।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “আদালতের নির্দেশ হাতে পেয়েছি। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।”