জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে হতাশ না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যে প্রক্রিয়ায় বিচার এগোচ্ছে, তাতে বর্তমান সরকারের আমলেই কাঙ্ক্ষিত মামলাগুলোর রায় পাওয়া যাবে।
রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘জুলাই গণহত্যার বিচার’ বিষয়ক আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন অনুষ্ঠানে গতকাল মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) উপদেষ্টা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
একজন আলোচকের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আমি বিশ্বাস করি না, পরবর্তীকালে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি যেই ক্ষমতায় আসুক, তারা এই বিচারের শৈথিল্য বা গাফিলতি দেখাবে। কারণ তারা সবাই আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে নির্যাতিত। তারা শেখ হাসিনা সরকারের ফ্যাসিজম আমাদের চেয়ে কম দেখেনি। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, আমরা এমনভাবে এই বিচারের অকাট্য সাক্ষ্য-প্রমাণ রেখে যাব, কোনো সরকার চাইলেও বিচার থেকে সরতে পারবে না।
আসিফ নজরুল বলেন, উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনে কোনো রকম গাফিলতি করিনি, কোনো রকম অন্যায় করিনি। জীবনে কোনোদিন এত পরিশ্রম করিনি। আর যাই করুন, এই বিচার নিয়ে আমাদের আন্তরিকতায় বিন্দুমাত্র সন্দেহ রাখবেন না। আমাদের সরকারের চেষ্টার ক্ষেত্রে কোনো শৈথিল্য নেই। তিনি বলেন, আমি যদি শহিদের পিতা হতাম, আমারও প্রশ্ন থাকত। আপনাদের মতো সন্তান হারালে আমি আরো বেশি আবেগপ্রবণ হতাম, আরো বেশি আক্রমণাত্মক সমালোচনা করতাম।
আরও পড়ুন : জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসে দেশের সব আদালত বন্ধ থাকবে
এত বড় গণহত্যা চালিয়েও আওয়ামী লীগের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই মন্তব্য করে আইন উপদেষ্টা আরো বলেন, একটা দল ১৫ বছর শুধু মিথ্যা আর নির্যাতন করে দেশ চালিয়েছে। এখনো তাদের মিথ্যাচার ও নির্যাতনের ইচ্ছা বিন্দুমাত্র থামেনি। আপনারা যখন মহাখুনি শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনতে পান, দেখবেন এখনো তার নির্যাতন করার ইচ্ছা আছে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহেরের স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠান শুরুর পর জুলাই আন্দোলনে নিহত ও সম্প্রতি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। পরে হতাহতদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করেন। এরপর জুলাই আন্দোলন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, জুলাই আন্দোলনে শহিদ ইয়ামিনের বাবা মো. মহী উদ্দিন, শহিদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ-এর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ছাত্র প্রতিনিধি আরমান হোসেন।