স্থায়ী নিয়োগ পাচ্ছেন হাইকোর্টের ৯ বিচারপতি, শপথ বিকেলে

পুলিশ হেফাজতে জনি হত্যা : দুই পুলিশ কর্মকর্তার যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল

রাজধানীর পল্লবী থানায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ফলে নিহত গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনির হত্যা মামলায় পল্লবী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান ও এএসআই কামরুজ্জামানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হাইকোর্ট বহাল রেখেছে। অপরদিকে, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল হাসানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ১০ বছর করা হয়েছে।

আজ সোমবার (১১ আগস্ট) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে এ মামলায় হাইকোর্টে গত ৯ জুলাই থেকে শুনানি চলছিল এবং গতকাল রোববার প্রথম দিনের রায়ের পর আজ সোমবার রায় ঘোষণা শেষ হয়েছে।

আদালতে আসামিপক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং আইনজীবী মো. আবদুর রাজ্জাক এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার উপস্থিত ছিলেন।

বাদীপক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম। রায় ঘোষণার পুরো সময় মামলার বাদী নিহত ইশতিয়াকের ভাই ইমতিয়াজ হোসেন ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনফৌজদারি কার্যবিধির ২০২৫ সালের নতুন সংশোধনীতে যা আছে

মামলার ইতিহাস অনুযায়ী, ঘটনাটি ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পল্লবীর ইরানি ক্যাম্প এলাকায় ঘটে। পুলিশের সোর্স সুমনের সঙ্গে বিরোধের পর ইশতিয়াক ও তার ভাই ইমতিয়াজকে পুলিশ ধরে নিয়ে যান এবং থানায় নির্যাতন করেন। ইশতিয়াকের অবস্থা খারাপ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করা হয় এবং ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ তাদের যাবজ্জীবন ও অন্যান্য সাজা দেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২৪ জন সাক্ষীর বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে। বিচারিক আদালতের তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে পাঁচজনকে অভিযুক্ত এবং পাঁচজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ে পল্লবী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল হাসান ও এএসআই কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এঁদের প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে বাদী বা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। অপর দুই আসামি পুলিশের সোর্স (তথ্যদাতা) সুমন ও রাসেলের সাত বছর কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন বিচারিক আদালত।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তিন আসামি ২০২০ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন। তাঁরা হলেন জাহিদুর রহমান, রাশেদুল হাসান ও রাসেল। ২০২১ সালে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন প্রণয়ন করা হয়। ইশতিয়াক হোসেনকে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট মামলা করা হয়, যেটি ওই আইনে করা প্রথম কোনো মামলা।