ঢাকা মহানগরের নতুন পিপি এহসানুল হক সমাজী
অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী

বিচারকদের জন্য মানি লন্ডারিং বেঞ্চ বইয়ের খসড়া চূড়ান্ত আইনজীবী সমাজীকে দায়িত্ব মার্কিন দূতাবাসের

বাংলাদেশের বিচারকদের জন্য তৈরি করা মানি লন্ডারিং বেঞ্চ বইয়ের খসড়া চূড়ান্ত করতে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দিয়েছে মার্কিন দূতাবাস। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল প্রসিকিউটোরিয়াল অ্যাডভাইজর (এটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদা) সমাজীর কাছে এ সংক্রান্ত এক চিঠি পাঠায় তারা।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সুপ্রিম কোর্টের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অফিস অফ ওভারসিস প্রসিকিউটোরিয়াল ডেভেলপমেন্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যান্ড ট্রেনিং মানি লন্ডারিং আইন সম্পর্কিত একটি ‘মানি লন্ডারিং বেঞ্চ’ বইয়ের খসড়া তৈরি করেছে। বইটি বিচারকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হবে এবং বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পাঠ্যক্রমেও অন্তর্ভুক্ত হবে।

মার্কিন দূতাবাসের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সমাজীর মেধা, দক্ষতা ও সৃষ্টিশীলতার ওপর তাদের আস্থা রয়েছে।

কর্মজীবন ও অভিজ্ঞতা

অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী ২০০৭-২০০৯ মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময়ে তিনি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ফৌজদারি আদালতের সব মামলার প্রতিনিধিত্ব করেন।

বর্তমান সরকার ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট তাকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করলেও তিনি সে পদ গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন।

সমাজী বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর মামলা পরিচালনা করেছেন। ক্রিমিনাল প্র্যাকটিশনার হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অনুশীলন করছেন। একইসঙ্গে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবেও কাজ করছেন।

শিক্ষাজীবন

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএলবি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালের ৩০ অক্টোবর একজন আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং একই বছরের ৪ নভেম্বর ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন।

১৯৮৮ সালের ৭ এপ্রিল তিনি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভুক্ত হন এবং ১৯৯২ সালের ২১ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন।

তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে পার্ট-টাইম ফ্যাকাল্টি হিসেবে ট্রায়াল ও অ্যাডভোকেসি দক্ষতা বিষয়ে পাঠদান করেছেন। ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি শিক্ষাদান চালিয়ে যান।

অবদান ও স্বীকৃতি

এহসানুল হক সমাজী বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধি (CrPC) সংশোধনীর জন্য জাতীয় পরামর্শদাতা ছিলেন। তিনি UNDP–Bangladesh-এর সঙ্গে কাজ করে গুরুত্বপূর্ণ আইনি কাগজ প্রস্তুত করেছেন।

বর্তমানে তিনি একজন স্বনামধন্য ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে পরিচিত।