বাকশাল প্রবর্তন সংক্রান্ত সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ। যাতে এটি বারবার বিঘ্নিত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।

আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাজনৈতিক দল ও ছয় ব্যক্তির করা চারটি আবেদনের ওপর এদিন সকালে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি চলে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানি করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) একই বিষয়ে প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরও আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ রাজনৈতিক দল ও ছয় ব্যক্তির করা আবেদনের শুনানি মুলতবি করেছিলেন। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আরও পড়ুন : নির্যাতন করার শক্তিকে সাংবিধানিক ক্ষমতা মনে করত আওয়ামী লীগ: আইন উপদেষ্টা

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বৈধ ঘোষণা করে।

পরবর্তীতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০০৫ সালে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হয়। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বাতিল ঘোষণা করে।

এই রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপসহ একাধিক সংশোধনী এনে জাতীয় সংসদ ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে এবং ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ হয়।

তবে ২০২৫ সালে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন। বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন এ আবেদনে যুক্ত হন।