দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই দিনে দুইজন সাবেক মন্ত্রী ও একজন সংসদ সদস্যের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।
দুদকের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক তানজিল আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
রেজাউল করিম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদেশ
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম ও তার স্ত্রী ফিরোজা পারভীনের আয়কর নথি জব্দের আবেদন করে দুদক।
আবেদনে বলা হয়, রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া তার নামে ১২টি ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য তদন্তাধীন।
অন্যদিকে, ফিরোজা পারভীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি স্বামী রেজাউল করিমের সহায়তায় ৪ কোটি ৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা ভোগদখলে রেখেছেন।
দুদক জানায়, মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আসামিদের আয়কর নথির স্থায়ী অংশ, বিবিধ অংশ, এ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা একান্ত প্রয়োজন।
শামীম ওসমানের আয়কর নথি জব্দ
একই আদালত দুর্নীতির মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের আয়কর নথি জব্দেরও আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিয়াস পাল এ আবেদন করেন।
এতে বলা হয়, শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্য থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া তার নয়টি ব্যাংক হিসাবে ৪৩৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়ও তদন্তাধীন রয়েছে। আদালতের আদেশে ২০০৯-১০ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়।
লোটাস কামাল ও পরিবারের নথি জব্দ
দুদকের আরেক আবেদনে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল), তার স্ত্রী কাশমিরি কামাল এবং দুই মেয়ে কাশফি কামাল ও নাফিসা কামালের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ দেন আদালত।
আবেদনে বলা হয়, সাবেক অর্থমন্ত্রী লোটাস কামালের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন ও ৩২টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ তদন্তাধীন।
তার স্ত্রী কাশমিরি কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্বামীর অবৈধ অর্থ বৈধ করার উদ্দেশ্যে ৪৪ কোটি ১১ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া তার নামে ২০টি ব্যাংক হিসাবে ২৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন পাওয়া গেছে।
মেয়ে কাশফি কামালের নামে ৩৮টি ব্যাংক হিসাবে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকার এবং নাফিসা কামালের নামে ১৮টি ব্যাংক হিসাবে ১৯৯ কোটি ২৩ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের আয়কর নথি জব্দ অপরিহার্য।

