ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, ভূমি মানুষের মৌলিক অধিকার, নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতার অন্যতম ভিত্তি। সুসংগঠিত, স্বচ্ছ ও আধুনিক ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যক্তি, পরিবার এবং রাষ্ট্র তিন স্তরেই সমৃদ্ধি নিশ্চিত করে। বর্তমান বিশ্বে জনসেবার কার্যক্রমকে গতিশীল, স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী করতে প্রযুক্তির ভূমিকা অতুলনীয়। সেই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল ভূমিসেবায় ‘২য় প্রজন্মের মিউটেশন সিস্টেম ২.১’ চালু করা হচ্ছে। সকল সমস্যা দূর করে ডিজিটাল ও স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সহজ, দ্রুত ও নির্ভুল সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যেই এই সিস্টেম চালু করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা আজ রাজধানীর ভূমি ভবনের সেমিনার হলে ‘জনবান্ধব অটোমেটেড ভূমিসেবা উদ্বোধন ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে’ এসব কথা বলেন।
ভূমি উপদেষ্টা বলেন, ২য় প্রজন্মের মিউটেশন সিস্টেম ২.১ গত ১ ডিসেম্বর ২০২৪ হতে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা মহানগর ও জেলার ১৯টি সার্কেল/উপজেলায় এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার ১টি সার্কেলে চালু করা হয় এবং তা সফলভাবে সম্পন্ন করে সারাদেশে (৩ পার্বত্য জেলা ব্যতীত) এ সিস্টেম উদ্বোধন করা হচ্ছে। সারাদেশে ভূমিসেবা সিস্টেমে শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এন্ট্রি করা এবং ভুল সংশোধনের জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে। গত ১৩ আগস্ট ২০২৫ ফেনী জেলায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। বর্তমানে আটটি জেলায় পাইলটিং প্রায় শেষ পর্যায়ে। পর্যায়ক্রমে শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিং এন্ট্রি এবং ভুল সংশোধনের এ কার্যক্রম সারাদেশে বাস্তবায়িত হবে। এর মাধ্যমে ভূমিসেবায় হিউম্যান টাচ আরো কমে আসবে। নামজারির জন্য নাগরিকদের মাত্র একবার উপজেলা ভূমি অফিসে যেতে হবে এবং নামজারির সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হোল্ডিং তৈরি হয়ে যাবে। এ সিস্টেম চালু হওয়ার ফলে তথ্য গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে একই জমি দ্বিতীয়বার বা বারবার বিক্রয় করার সুযোগ বন্ধ হবে। এই সিস্টেম যথাযথ অনুসরণ করে জয়পুরহাট জেলার শতভাগ খতিয়ান ও হোল্ডিংয়ের নির্ভুল তথ্য সন্নিবেশ করা সম্ভব হয়েছে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, এছাড়াও সকল ভূমিসেবা সাধারণ মানুষের হাতের মুঠোয় আনার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় ‘ভূমি অ্যাপ’ চালু করতে যাচ্ছে। ভূমি অ্যাপ এর মাধ্যমে জনগণ ভূমি সংক্রান্ত সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। ভূমিসেবা প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভূমি মন্ত্রণালয় ভূমিসেবায় কর্মকৃতিভিত্তিক মূল্যায়ন করে আট বিভাগের আটজন শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, আটজন সার্ভেয়ার, সাতজন কানুনগো, নয়জন সহকারী কমিশনার (ভূমি), আটজন রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর, আটজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), আটজন জেলা প্রশাসক ও দুইজন বিভাগীয় কমিশনারকে সনদ ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হবে। এই উদ্যোগ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আরো উদ্দীপ্ত করে জনগণের দোরগোড়ায় ভূমি সেবাকে পৌঁছে দিতে সহায়তা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি Stefan Liller ।

