যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেসনসকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে জেফ সেসনসকে সরিয়ে দেওয়ার পর ম্যাথিউ হুইটেকারকে অ্যাটর্নি জেনারেলের অস্থায়ী দায়িত্ব দিয়েছেন ট্রাম্প।
সেসনসের চিফ অব স্টাফ হুইটকার রুশ তদন্তের সমালোচক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নিজের সিদ্ধান্তে সরতে না চাওয়ার কথা পদত্যাগ পত্রে গোপন রাখেননি সেসনস।
বুধবার (৭ নভেম্বর) এক টুইট বার্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেসনসকে তার কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আর তার মঙ্গল কামনা করছি। হোয়াইট হাউসকে পাশ কাটিয়ে রুশ সংযোগ তদন্ত থেকে পার পেতে নিজের শীর্ষ আইন কর্মকর্তাদের বারবার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।
আলবামার সাবেক সিনেটর জেফ সেসনস ট্রাম্পের প্রাথমিক সমর্থকদের একজন। তারিখহীন এক পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় প্রেসিডেন্ট, আপনার অনুরোধেই আমি পদত্যাগপত্র দাখিল করছি’। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওই চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আমার সময়ে আমরা আইনের শাসন পুনর্বহাল ও সমুন্নত রেখেছি’।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ জন কেলি বুধবার সেসনসকে পদত্যাগ করতে বলেন। এরপরেই ট্রাম্প মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফল নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
২০১৭ সালের মার্চে সেসনস রুশ সংযোগ তদন্ত ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার পর ট্রাম্প প্রকাশ্যে বারবার তার আইন কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেন। তখন থেকে ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণা শিবির ও মস্কোর মধ্যে সম্ভাব্য যোগাযোগের বিষয়ে প্রমাণ অনুসন্ধান শুরু করেন বিশেষ কৌসুলি রবার্ট মুলার। আইন মন্ত্রণালয়ের তদারকিতে বিস্তৃত এই তদন্তের কারণে ট্রাম্পের কয়েকজন ঘণিষ্ঠ সহকারির বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
২০১৭ সালের জুলাইতে নিউ ইয়র্ক টাইমসে ট্রাম্প বলেন, ‘সেসনস নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন না। আর যদি তিনি নিজেক রক্ষা করতে চান তাহলে তাকে আমাকে তার চাকরিটি নিয়ে নিতে বলতে হবে আর আমি অন্য কাউকে বেছে নেব’।
প্রেসিডেন্ট সরাসরি বিশেষ কৌসুলিকে বরখাস্ত করতে পারেন না। তবে সেসনসের পরিবর্তে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে তার সেই ক্ষমতা থাকবে। তিনি চাইলে রুশ সংযোগ তদন্ত বন্ধ করেও দিতে পারবেন।
সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রজেনস্টেইন এখন আর মুলারের তদন্ত দেখভাল করছেন না। ম্যাথিউ হুইটকারই সেই নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। ২০১৭ সালের জুলাইতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্ত করার পর এর সঙ্গে রুশ সংযোগ তদন্ত খতিয়ে দেখতে মুলারকে নিয়োগ দিয়েছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। বিচারে বাধা সৃষ্টি করতে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল কিনা তা এখনও তদন্ত করে দেখছেন বিশেষ কৌসুলি মুলার। সম্প্রতি খবর প্রকাশিত হয় প্রেসিডেন্টের অভিশংসনে সাংবিধানিক একটি ধারা নিয়ে আলোচনা করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রজেনস্টেইন। বুধবার তাকে ডেকে পাঠানো হয় হোয়াইট হাউসে। হোয়াইট হাউসের তরফে একে পূর্বঘোষিত বৈঠক বলে দাবি করা হলেও রজেনস্টেইনের ভবিষ্যত নিয়ে আর পর শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখনও সেই ঘোষণা আসেনি।