বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে চলমান গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ মামলা বাতিল চেয়ে দুই আসামির আবেদন খারিজ করে দিয়ে আজ রোববার (২৫ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে এ মামলার দুই আসামিকে (গ্যাটকোর সাবেক পরিচালক সৈয়দ গালিব আহমেদ ও সৈয়দ তানভীর আহমেদ) নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে মামলার ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ তুলে নেন আদালত।
আদালতে মামলা বাতিল চেয়ে আসামি সৈয়দ গালিব আহমেদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি ও অন্য আসামি সৈয়দ তানভীর আহমেদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আহসানুল করিম। অন্যদিকে, দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এর ফলে হাইকোর্টের আদেশের পর খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা নিম্ন আদালতে চলতে আর কোনও বাঁধা থাকছে না বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এর আগে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার আসামি গ্যাটকোর (গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেড) সাবেক পরিচালক সৈয়দ গালিব আহমেদ ও সৈয়দ তানভীর আহমেদ মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ জুলাই মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দুই আসামিকে জামিন দেন আদালত। এর ফলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এ মামলাটির কার্যক্রম দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বন্ধ থাকে।
এরপর গত ১১ নভেম্বর থেকে এই মামলা বাতিল চেয়ে করা রুলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। শুনানি নিয়ে রবিবার (২৫ নভেম্বর) আবেদনটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, এর আগে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেডকে বেআইনি, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাজটি পাইয়ে দিয়ে নিজে এবং অন্যদের আর্থিক সুবিধা প্রদান করায় খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সরকারের একহাজার কোটি টাকা ক্ষতি সাধনের অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়া, তার ছেলে (মৃত) আরাফাত রহমান কোকো, তৎকালীন নৌপরিবহন মন্ত্রী আকবর হোসেন ও তার ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন, সৈয়দ গালিব আহমেদ, সৈয়দ তানভীর আহমেদসহ ১৩ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
এরপর ২০০৮ সালের ১৩ মে দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল হুদা তদন্ত করে ২৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশে দীর্ঘদিন মামলাটির ওপর স্থগিতাদেশ থাকায় বিশেষ আদালতে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি বন্ধ থেকে যায়।