২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসাবে অভিহিত করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতিয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। ঢাকা ও চট্টগ্রামে এ কর্মসূচী পালন করেছে বিএনপিপন্থী এই আইনজীবী সংগঠনটি।
ঢাকায় ৩০ ডিসেম্বরকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে অভিহিত করে সুপ্রিম কোর্টে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে কোর্ট গেটের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করে।
এ সময় তারা গত নির্বাচনে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে নানা স্লোগান দেন। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন আইনজীবীরা।
এদিকে আইনজীবীদের মিছিলটি যেনো সুপ্রিম কোর্ট সীমানার বাইরে যেতে না পারে সেজন্য গেট আটকে দেয়া হয়। গেটের বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম চট্টগ্রামের উদ্যোগে “গণতন্ত্র হত্যা দিবস” উপলক্ষে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় নতুন আদালত ভবন প্রধান ফটকে এক বিক্ষোভ ও কালো পতাকা সমেত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সদস্য জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.এস.এম. বদরুল আনোয়ার।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এডঃ কামরুল ইসলাম সাজ্জাদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, এনামুল হক, আবদুস সাত্তার সারোয়ার, রফিক আহম্মেদ, হায়দার মোঃ সোলায়মান, নুর উদ্দিন আরিফ, নুরুল ইসলাম, ফোরকান, আজিজুল হক, হাসান আলী, ইফতেখার মহসিন, সেলিনা খানম, এরশাদুর রহমান রিটু, সেলিম উদ্দিন শাহীন, মুরশিদ আলম, খালেদা জিয়া মুক্তি মঞ্চের আহবায়ক অ্যাডভোকেট এম. আনোয়ার হোসেন, হাসনা হেনা, রুনা কাশেম, দেলোয়ার হোসেন, তৌহিদুল হোসেন সিকদার প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
সভায় বক্তারা বলেন, বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতার জোরে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছেন। যার কারণে এদেশের মানুষ নির্বাচন বিমুখ হয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগে অনাগ্রহী হয়ে পড়েছেন। বিগত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের পূর্ববর্তী দিন ২৯ তারিখ দিবাগত রাতে প্রশাসন ও যৌথ মহড়ায় নির্বাচন নামক হাস্যকর নাটকমঞ্চস্থ করে বাংলাদেশের জনগনের কাছে আওয়ামীলীগ একটি স্বৈরাচারী দল হিসেবে মুখোশ উম্মোচন করেছেন। আজকে বাংলাদেশে নির্যাতিত মজলুম জনগন তাদের প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। কথায় কথায় মিথ্যা মামলায় ও হত্যা, গুমের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকদের উপর চরম নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। দেশের বর্তমান প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় মিথ্যা সাজানো মামলার রায়ে কারারুদ্ধ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জামিন লাভের অধিকারী হলেও সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হস্তক্ষেপে জামিনে বাধা প্রদান করে দেশ তথা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। দেশের এমন পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র ও কথা বলার স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবিসম্ভাবী হওয়ায় অবিলম্বে তার মুক্তি দাবী করেন।
সমাবেশ শেষে কালো পতাকা সমেত একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।