চন্দন কান্তি নাথ:
ফৌজদারি মামলা থানায় দায়ের হওয়ার পরপরই ফৌজদারি কার্যবিধি এর ধারা ১৫৫ ও ১৫৬ মোতাবেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্ত শুরু করেন। আমলযোগ্য অপরাধ হলে ম্যাজিস্ট্রেট এর অনুমতি দরকার হয় না। কিন্তু অআমলযোগ্য মামলার ক্ষেত্রে অনুমতি দরকার হয়। সাধারণত গুরুতর মামলা আমলযোগ্য হয়। মামলা তদন্ত শুরু হলেই কি আগে গ্রেপ্তার দরকার সেটি অনেকের কাছে আইনি প্রশ্ন। ফৌজদারি কার্য বিধি ৫৪(১) ধারায় আছে- যে কোন পুলিশ অফিসার ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশ অথবা পরোয়ানা ব্যতিত নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণকে গ্রেফতার করতে পারবেন-
প্রথমত: কোন আমলযোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত কোন ব্যক্তি অথবা এরূপ জড়িত বলে যার বিরুদ্ধে যুক্তিসংগত অভিযোগ করা হয়েছে অথবা বিশ্বাসযোগ্য খবর পাওয়া গেছে, অথবা যুক্তিসংগত সন্দেহ রয়েছে।
উক্ত ধারার “আমলযোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত” (has been concerned in any cognizable offence), “এরূপ জড়িত বলে যার বিরুদ্ধে যুক্তিসংগত অভিযোগ করা হয়েছে” (against whom a reasonable complaint has been made), “বিশ্বাস যোগ্য খবর পাওয়া গেছে” (credible information has been received), “যুক্তিসংগত সন্দেহ রয়েছে” (reasonable suspicion exists) কথাগুলো রয়েছে। অর্থাৎ আমলযোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত না থাকলে, অথবা এরূপ যুক্তিসংগত অভিযোগ না থাকলে, খবর বিশ্বাস যোগ্য না হলে, যুক্তি সঙ্গত সন্দেহ না থাকলে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করবেন না। আবার উক্ত বিধির ৫৪ এ আরো আছে-
দ্বিতীয়ত: আইনসংগত কারণ ব্যতিত যার নিকট ঘর ভাঙ্গার কোন সরঞ্জাম রয়েছে সেরূপ ব্যক্তি; এই আইনসঙ্গত কারণ প্রমাণ করার দায়িত্ব তার।
উপরের ধারায়, “আইনসংগত কারণ ব্যতিত” “যার নিকট ঘর ভাঙ্গার কোন সরঞ্জাম রয়েছে” কথা গুলো রয়েছে যার অর্থ কেউ যদি দেখাতে পারে আইন সঙ্গত কারণে এবং প্রয়োজনে কেউ উক্ত রূপ যন্ত্র রেখেছে তাহলে ও পুলিশ গ্রেফতার করবেন না।
তৃতীয়: কার্যবিধি অনুসারে অথবা সরকারের আদেশ দ্বারা যাকে অপরাধী ঘোষণা করা হয়েছে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে অথবা
চতুর্থত: চোরাই বলে যক্তিসংগতভাবে সন্দেহ করা যেতে পারে, এরূপ মাল যার নিকট রয়েছে এবং যে এরূপ মাল সম্পর্কে কোন অপরাধ করেছে বলে যুক্তিসংগতভাবে সন্দেহ করা যেতে পারে।উক্ত ধারার “যুক্তিসংগতভাবে” শব্দ টি গুরুত্বপূর্ণ এবং যুক্তিসংগতভাবে সন্দেহ করা না হলে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না অথবা
পঞ্চমত: পুলিশ অফিসারকে তার কার্যে বাধাদানকারী ব্যক্তি অথবা যে ব্যক্তি আইনসংগত হেফাজত হতে পলায়ন করেছে অথবা পলায়নের চেষ্টা করে অথবা
ষষ্ঠতঃ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী হতে পলায়নকারী বলে যাকে যুক্তিসংগতভাবে সন্দেহ করা যেতে পারে অথবা
সপ্তমত: বাংলাদেশে করা হলে অপরাধ হিসাবে শাস্তিযোগ্য হতো, বাংলাদেশের বাইরে কৃত এরূপ কোন কার্যের সাথে জড়িত ব্যক্তি অথবা এরূপে জড়িত বলে যার বিরুদ্ধে যুক্তিসংগত অভিযোগ করা হয়েছে, অথবা বিশ্বাসযোগ্য খবর পাওয়া গেছে, অথবা যক্তিসংগত সন্দেহ রয়েছে এবং যার জন্য সে প্রত্যাপণ সম্পর্কিত কোন আইন অথবা ১৮৮১ সালের পলাতক অপরাধী আইন অনুসারে অথবা অন্য কোনভাবে বাংলাদেশে গ্রেফতার হতে অথবা হেফাজতে আটক থাকতে বাধ্য অথবা
অষ্টমত: কোন মুক্তিপ্রাপ্ত আসামী যে ৫৬৫ ধারার (৩) উপধারা অনুসারে প্রণীত কোন নিয়ম লংঘন করে অথবা
নবমত: যাকে গ্রেফতারের জন্য অন্য কোন পুলিশ অফিসারের নিকট হতে অনুরোধ পাওয়া গেছে। যদি যাকে গ্রেফতার করা হবে তার এবং যে অপরাধ বা অন্য যে কোন কারণে গ্রেফতার করা হবে সেই ব্যাপারে অনুরোধ প্রেরণ করেছেন, সেই অফিসার উক্ত ব্যক্তিকে আইনসংগতভাবে বিনা পরোয়ানায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবেন।
কোনো ব্যাক্তিকে যে কারণেই গ্রেফতার করা হউক না তাঁকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সংবিধান ও ফৌজদারি কার্য বিধি অনুসারে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ধারা ১৬৭(১) মোতাবেক হাজির করতে হয়। ১৬৭ (১) পড়লেই তা বুঝা যায়। আসামী হাজির করার বিধান কার্য বিধির অন্য কোনো ধারায় নাই।
আবার সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৩ (১) এ আছে – গ্রেপ্তারকৃত কোন ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্র গ্রেপ্তারের কারণ জ্ঞাপন না করে প্রহরায় আটক রাখা যাবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাঁর মনোনীত আইনজীবীর সহিত পরামর্শের ও তাঁর দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাবে না।
সে কারণে আপিল বিভাগের BLAST vs Bangladesh (AD) মামলা তে বলা হয় – গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি চাইলে তাকে যেকোনো স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ বা আইনজীবীর কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। কোনো ব্যক্তিকে যখন আদালতে হাজির করা হবে, তখন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তার ফরওয়ার্ডিং লেটারে উল্লেখ করবেন যে, কেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত শেষ করা সম্ভব নয়। ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ সুনির্দিষ্ট বলে তিনি মনে করছেন, তাও উল্লেখ করতে হবে’।
অনুচ্ছেদ ৭ এ আছে -সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন আবার অনুচ্ছেদ ৩২ এ আছে – আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতা হইতে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।
আবার ধারা ১৬৭(১) তে আছে – “যখন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে হেফাজতে আটক রাখা হয় এবং ইহা প্রতীয়মান হয় যে, ৬১ ধারায় নির্ধারিত ২৪ ঘন্টা সময়ের মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করা যাবে না এবং এরূপ বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে, অভিযোগ বা সংবাদ দৃঢ় ভিত্তিক, তখন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা তিনি যদি সাব-ইনসপেকটর পদের নিম্ন পর্যায়ের না হন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে অতঃপর নির্ধারিত ডায়েরীতে লিখিত ঘটনা সম্পকিত নকল নিকটবতী ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করবেন, এবং একই সময়ে আসামীকে উক্ত ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করবেন।”
উক্ত ধারায় “২৪ ঘন্টা সময়ের মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করা যাবে না” এবং উক্ত ধারার “এরূপ বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে, অভিযোগ বা সংবাদ দৃঢ় ভিত্তিক (there are grounds for believing that the accusation or information is well-founded) “কথা গুলো দিয়ে বুঝা যায় পুলিশ ২৪ ঘন্টাতে তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করবেন কিন্তু কোনো কারণে তদন্ত শেষ করতে না পারলে কোনো ব্যক্তি কেন গ্রেপ্তার করলেন ও তার বিরুদ্ধে কি রকম অভিযোগ বা সংবাদ যা দৃঢ় ভিত্তিক এবং কেনো তা বিশ্বাস যোগ্য তা বিস্তারিত কেস ডায়েরিতে উল্লেখ পূর্বক তাকে আদালতে পাঠাবেন। আবার উপরে উল্লেখিত ফৌজদারি কার্য বিধির ১৬৭(১) মোতাবেক আসামী আদালতে পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে তদন্তের কেস ডায়েরি পাঠাতে হবে বলা আছে। ৫৫ ডি এল আর (হাই কোর্ট ডিভিশন) পৃষ্ঠা ৩৬৩ এর ২০ প্যারাতে ফৌজদারি কার্য বিধির ১৬৭ (১)এর “অতঃপর নির্ধারিত ডায়েরীতে লিখিত ঘটনা সম্পকিত নকল” (shall forthwith transmit to the nearest Judicial Magistrate a copy of the entries in the diary) দিয়ে বুঝিয়েছেন এটা উক্ত ফৌজদারি কার্য বিধির ধারা ১৭২ এর তদন্তের কেস ডায়েরি যা অবশ্যই আসামী কে হাজির করার সময়ই উপস্থাপন করতে হবে। আগেই বলা হয়েছে উক্ত কেস ডায়েরিতে সংবাদ দৃঢ় ভিত্তিক হলে এবং তা বিশ্বাস যোগ্য হলে তা অবশ্যই সেখানে উল্লেখ করতে হবে। আবার আইনের ধারাতে “shall” দিয়ে বুঝানো হয়েছে পুলিশ কে আবশ্যক ভাবে তা করতে হবে। তা না করলে মাননীয় আপিল বিভাগের BLAST vs Bangladesh (AD) মামলা তে ম্যাজিস্ট্রেট, বিচারকদের জন্য গাইডলাইনে বলা হয়েছে, ‘কোন যুক্তিতে, কাউকে কোনো তথ্যে বা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, ঠিকানাসহ তা কেস ডায়েরিতে লিখতে হবে এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ (১) ধারা অনুসারে ডায়েরির অনুলিপি ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাউকে আদালতে হাজির করে আটকাদেশ চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট, আদালত, ট্রাইব্যুনাল একটি বন্ড গ্রহণ করে তাকে মুক্তি দিয়ে দেবেন’। আর ১৬৭ ধারায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কোনো আদালতে হাজির করা হলে শর্তগুলো পূরণ করা হয়েছে কি-না, সেটা দেখা ম্যাজিস্ট্রেট বা বিচারকের দায়িত্ব। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ যদি কাউকে আইনের বাইরে গিয়ে আটক করে থাকেন, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট দণ্ডবিধির ২২০ ধারায় তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন’। ‘হেফাজতে কারো মৃত্যু হলে বিচারক মেডিকেল বোর্ড গঠন করে মৃত ব্যক্তিকে পরীক্ষা করাবেন। এমনকি দাফন হয়ে গেলেও সেটা করতে হবে। নিপীড়নে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদন পাওয়া গেলে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন অনুসারে ওই কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কমান্ডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নিতে হবে’।
‘মেডিকেল প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে নির্যাতনের ফলে হেফাজতে মৃত্যু বা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতীয়মান হলে বিচারক স্বপ্রণোদিত হয়ে ওই অপরাধ আমলে নেবেন। মামলা দায়েরের অপেক্ষা করবেন না’।
তবে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন অনুসারে সংশ্লিষ্ট জেলা জজ মহোদয় হেফাজতে মৃত্যু ও নির্যাতনের মামলা আমলে নিয়ে থাকেন |সেক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট দন্ড বিধিসহ অন্য ধারাতে মামলা আমলে নিতে পারেন।
আর পুলিশ অবশ্যই আইন অনুযায়ী উপরের কাজ করতে বাধ্য হবেন। পি আর বি এর ২১ এ আছে ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ এর কাজে হস্তক্ষেপ করবে না কিন্তু যারা cognizane করেন তাদের তদন্ত কার্যক্রমে দায়িত্ব আছে মর্মে স্মরণ করানো হয়েছে। আর বিচারকরা বিচার কাজে সম্পূর্ণ স্বাধীন। সংবিধানের ১১৬( ক) তে আছে- এই সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ এবং ম্যাজিষ্ট্রেটগণ বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন ।পুলিশ এর পুলিশ আইন, ১৮৬১ (The Police Act, 1861) এর ২৩(১) (৬) ধারায় আছে – উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সকল প্রকার বৈধ আদেশ দ্রুত পালন ও কার্যকরী করা ও অপরাধের বৃত্তান্ত অনুসন্ধান বা উদঘাটন করা পুলিশ এর দায়িত্ব। উক্ত আইনের ২৯ ধারায় আছে – কর্তব্যচ্যুতির কোন নিয়ম স্বেচ্ছাকৃত অমান্য করলে ও উপর্যুক্ত কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি করা যাবে। সে জন্যে পুলিশ আইন অনুযায়ী কাজ করবেন। তাছাড়া আমাদের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে আছে – সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিকদায়িত্ব পালন করা এবং… প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য৷ তাছাড়া ৩১ অনুচ্ছেদে আছে “…. এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং…… অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষতঃ আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।”
আবার UDHR (Universal declaration of Human Rights) এর অনুচ্ছেদ ৯ তে আছে –
” No one shall be subjected to arbitrary arrest, detention or exile.”
ICCPR ( International Covenant on Civil and Political Rights) এর অনুচ্ছেদ ৯ তে আছে,
” 1. Everyone has the right to liberty and security of person. No one shall be subjected to arbitrary arrest or detention. No one shall be deprived of his liberty except on such grounds and in accordance with such procedure as are established by law.
- Anyone who is arrested shall be informed, at the time of arrest, of the reasons for his arrest and shall be promptly informed of any charges against him.
- Anyone arrested or detained on a criminal charge shall be brought promptly before a judge or other officer authorized by law to exercise judicial power and shall be entitled to trial within a reasonable time or to release. It shall not be the general rule that persons awaiting trial shall be detained in custody, but release may be subject to guarantees to appear for trial, at any other stage of the judicial proceedings, and, should occasion arise, for execution of the judgement.
- Anyone who is deprived of his liberty by arrest or detention shall be entitled to take proceedings before a court, in order that that court may decide without delay on the lawfulness of his detention and order his release if the detention is not lawful.
- Anyone who has been the victim of unlawful arrest or detention shall have an enforceable right to compensation.”
বাংলাদেশ উক্ত দলিলটিতে এবং উক্ত অনুচ্ছেদ এর উপর কোনো reservation ছাড়া অনুস্বাক্ষর করেছে। আমাদের সংবিধান এর ২৫ অনুচ্ছেদ এ আছে, “..এবং আন্তর্জাতিক আইনের ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা(-respect for international law and the principles enunciated in the United Nations Charter)… রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং …” কাউকে গ্রেফতার করলেই শুধু উপরের বাধ্যবাধকতা পুলিশের উপর আসে। আবার আবার পি আর বি এর প্রবিধান ৫৪ তে আছে – কোনো প্রকার দেরী ছাড়া তদন্ত শুরু হল কিনা কিংবা তদন্ত কর্মকর্তা শুধুমাত্র স্বীকারোক্তি এর উপর নির্ভর করছে না কিংবা কোনো প্রেসআর কিংবা অনুচিত প্রভাব এর ভিত্তিতে স্বীকারোক্তি নিচ্ছেন না তা তাঁর তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা তদারকি করবেন।
তাই গ্রেপ্তারের চেয়ে ঘটনা এর রহস্য আগে উদ্ধার করা উচিত। এখানে উল্লেখ্য যে সরকার মাননীয় আপিল বিভাগের উপরে উল্লেখিত রায় এর বিরুদ্ধে রিভিউ করেছেন কিন্তু তা বর্তমানে যে আইন আছে তা সংশোধন না করার জন্যে।
রাষ্ট্রপক্ষ এর রিভিউ আবেদনে বলা হয়, এ দুটি ধারা(৫৪ ও ১৬৭) সংশ্লিষ্ট যে আইনে রয়েছে, তা যথেষ্ট ও সঠিক এবং এজন্য আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের কোনো প্রয়োজন নেই।আর উপরের আলোচনা উপরের দুটি ধারার উপর করা হয়েছে। আর মাননীয় আপিল বিভাগ ও তাঁর নির্দেশনাগুলো স্থগিত করেননি।
আমাদের পুলিশ আমাদের গর্ব। তাঁরা করোনা ভাইরাস এর সময় কিংবা জঙ্গি দমন করার ক্ষেত্রে কিংবা জাতি সঙ্ঘের নিয়ন্ত্রণে শান্তি রক্ষার ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। তথ্য প্রমাণ এর ভিত্তিতে পুলিশ অবশ্যই গ্রেফতার করতে পারে। তবে সাক্ষ্য প্রমাণ তদন্ত দৃঢ় হলে অপরাধী সহজে ছাড়া পাবে না। আইন, সংবিধান, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন রক্ষা হবে এবং আসামী সাজা পাবে। তাই সাধারণ ভাবে সাক্ষ্য প্রমাণ তদন্ত আগে পরে গ্রেফতার এ মনোযোগী হওয়া উচিত।
লেখক- সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, কুমিল্লা।