যৌন পেশা অপরাধ নয় বলে মন্তব্য করল মুম্বাই হাইকোর্ট। একটি হোমে বন্দি তিন যৌনকর্মীকে মুক্তি দিয়ে মুম্বাই হাইকোর্টের বিচারপতি পৃথ্বীরাজ কে চহ্বাণ জানিয়েছেন, প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার নিজের পেশা বেছে নেওয়ার অধিকার আছে। বিচারপতি জানান, কোনও প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাকে তাঁর সম্মতি ছাড়া আটক রাখা যায় না।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, অনৈতিক পাচার রোধ আইনে যৌন পেশায় যোগ দেওয়ার জন্য কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা বা কাউকে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। কিন্তু যৌন ব্যবসার কারণে কাউকে নির্যাতন করা হলে বা প্রকাশ্য স্থানে যৌন ব্যবসা সংক্রান্ত প্রলোভন দেখানো হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মহারাষ্ট্রের মালাড এলাকায় একটি গেস্ট হাউসে যৌন চক্রের খবর পেয়ে ফাঁদ পেতে তিন মহিলা ও নিজামুদ্দিন খান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিম্ন আদালতে শুনানির সময়ে প্রকাশ পায়, ওই তিন মহিলা ‘বেদিয়া’ সম্প্রদায়ের। ওই সম্প্রদায়ে মহিলাদের নির্দিষ্ট বয়সের পরে যৌন পেশায় যোগ দিতে পাঠানোর রেওয়াজ আছে।
ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত জানায়, এখানে বাবা-মা মেয়েকে যৌন পেশায় যোগ দেওয়ার অনুমতি দিচ্ছেন। তাই এ ক্ষেত্রে মায়ের হাতে মেয়ের দায়িত্ব দেওয়া নিরাপদ নয়। ওই তিন মহিলাকে এক বছর মহারাষ্ট্রের একটি হোমে আটক রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরে দায়রা আদালতও ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায় বহাল রাখে। কিন্তু হাইকোর্ট জানিয়েছে, ওই তিন মহিলার বিরুদ্ধে মামলা চালানো হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে তাঁদের কোনও প্রতিষ্ঠানের হেফাজতে রাখা অর্থহীন।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, রায় দেখে মনে হয় ওই তিন মহিলা যে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের সদস্য, সেই বিষয়টি ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রভাবিত করেছিল। তাঁর মনে রাখা উচিত ছিল, ওই তিন মহিলা প্রাপ্তবয়স্ক। হোমে পাঠানোর আগে তাঁদের মত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। তাঁরা প্রকাশ্য স্থানে যৌন ব্যবসা সংক্রান্ত প্রলোভন দেখিয়েছেন বা যৌন পল্লী চালাতেন এমন কোনও প্রমাণও নেই। ফলে তাঁদের হোমে আটক রাখা অর্থহীন।
সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা