নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়ের করা মামলায় ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (এমপি) মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারোয়ার কাজলের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
আদালতে নিক্সন চৌধুরীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ড. শাহদীন মালিক।
আগাম জামিন আবেদনের শুনানিতে তার কথোপকথনের রেকর্ডিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়াকে সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিক্সনের পক্ষে তার আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক আদালতের সামনে ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়া মোবাইলে কথোপকথন রেকর্ড করতে পারে কি-না’ বলে প্রশ্ন তোলেন। তিনি এটিকে ইলিগ্যাল (অবৈধ) বলেও উল্লেখ করেন।
শুনানিতে আইনজীবী বলেন, কেউ একজন সংসদ সদস্যের বক্তব্য রেকর্ডিং করতে পারে কি-না।
আদালত তখন আইনজীবীর কাছে জানতে চান, এটি কি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা?
জবাবে আইনজীবী বলেন, জ্বি না, এটি এ (ডিজিটাল নিরাপত্তা) আইনের মামলা নয়। এটি নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের মামলা। তবে রেকর্ড করে তারা সংবিধানিক অধিকার অর্থাৎ গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছে।
এর আগে, গত রোববার (১৮ অক্টোবর) আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন নিক্সন চৌধুরী। আদালত আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের (২০ অক্টোবর) দিন ধার্য করেন।
গত ১৫ অক্টোবর উপজেলা নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নিক্সনের বিরুদ্ধে মামলা করে ইসি। ইসির পক্ষে জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার নোয়াবুল ইসলাম বাদী হয়ে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন থানায় এ মামলা করেন।
চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) হুমকি ও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের গালাগাল করার অভিযোগ আনা হয় মামলায়।
ইসি সূত্র জানায়, গত ১০ অক্টোবর ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচন কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের হুমকি এবং নির্বাচন কর্মকর্তাদের গালাগাল করেন নিক্সন চৌধুরী। এ ঘটনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে অশোভন আচরণের বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে নির্বাচন কমিশনেও চিঠি দেয়।
ওই চিঠি পর্যালোচনা করে কমিশন সচিবালয় উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা অনুযায়ী মামলার সিদ্ধান্ত নেন। বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে সর্বোচ্চ ছয় মাস কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
তবে নিক্সন চৌধুরীর দাবি, তিনি কাউকে হুমকি দেননি। সুপার এডিট করে হুমকির ভিডিও প্রচার করে তাকে হেনস্তা করা হচ্ছে।