সাবেক স্পীকার ও সুপ্রীম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারের জন্মদিন পালন করেছে আইনজীবীরা।
আজ রোববার (৩ ডিসেম্বর) সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে কেক কেটে উদযাপন করা হয়েছে প্রবীণ এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্মদিন।
পহেলা ডিসেম্বর ৮৬ বছরে পা রাখা সাবেক এই আইন প্রণেতাকে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদিন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
জন্ম ও পরিচয়
জমিরউদ্দিন সরকার ১৯৩১ সালের ১ ডিসেম্বর পঞ্চগড় জেলার তেতুঁলিয়া থানার নয়াবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মৌলভী মুহম্মদ আজিজ বক্স একজন জোতদার ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ও এলএলবি পাশ করেন। পরে লন্ডনের লিঙ্কন ইন থেকে ব্যারিস্টারি পাশ করে এসে ঢাকা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন। তিনি এক কন্যা ও দুই পুত্রের জনক।
রাজনীতি ও অন্যান্য
এ নিয়ে মোট ৪ বার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হলেন ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার। এর আগে তিনি ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয়, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবেও বেশ কিছু দিন দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী পদত্যাগ করার পর নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত সংবিধান অনুযায়ী স্পিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সাবেক বিএনপি সরকারে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০-৮২ সময়কালে তিনি প্রথমে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১-৯৬ সময়কালে তিনি ভূমি, শিক্ষা এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত স্বল্পকালীন বিএনপি সরকারে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৪৫ সালে ছাত্র থাকা অবস্থায় তৎকালীন ছাত্র ফেডারেশনের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু। পরে তিনি ছাত্র ইউনিয়ন ও ন্যাপের সমর্থক ছিলেন। ১৯৭১ সালে হাইকোর্টে আইনজীবীদের যে গ্রুপটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে জমিরউদ্দিন সরকার ছিলেন তাদের একজন। আইন পেশায় সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তাকে পাঁচবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান। দল গঠনের প্রথম পর্যায়ে জিয়াউর রহমান জাগদল গঠন করলে তিনি তাতে যোগ দেন। তিনি ছিলেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল বা জাগদল-এর ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম সারির সদস্য। পরে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি এর স্থায়ী কমিটির সদস্য হন। প্রথমবার গণপূর্ত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি বর্তমান সংসদ ভবনের অসমাপ্ত কাজ শেষ করেন।
ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ও লাতিন আমেরিকার বহু দেশ সফর করেছেন এবং আন্তর্জাতিক বহু আইন সম্মেলন ও সেমিনারে সভাপতিত্ব করেছেন।
প্রকাশিত বই
গণতন্ত্রের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ,এক নজরে সংসদ সম্পর্কিত বিধিবিধান,লন্ডনে শিক্ষা জীবন ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার রচিত প্রকাশিত বই।
নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম