চটজলদি তৈরি খাবারে ম্যাগি নুডলসের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু, তাই বলে তিনবেলা কেউ ম্যাগি খেতে পছন্দ করবেন? সকাল, দুপুর, রাত—তিনবেলাতেই নুডলস। স্ত্রী আর কোনো খাবার দেন না। স্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে আদালতের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি।
দেশটির কর্ণাটক রাজ্যের মাইসুরুর জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক এম এল রঘুনাথের বিবরণে বিবাহবিচ্ছেদের এ ঘটনা সামনে এসেছে। ভারতের ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অনলাইনের প্রতিবেদনে গতকাল শনিবার (২৮ মে) এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার রঘুনাথ জানান, তিনি যখন কর্ণাটক রাজ্যের বল্লারির জেলা আদালতের বিচারক ছিলেন, তখন তাঁর কাছে এ বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনটি আসে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কেউই রান্না জানতেন না। অগত্যা ম্যাগির উপরই ভরসা করতে হয়েছিল তাঁদের।
বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনে স্বামী অভিযোগ করেন, ম্যাগি নুডলস ছাড়া আর কোনো খাবার রান্না করতে জানতেন না তাঁর স্ত্রী। তাই তাঁকে সকালের নাশতা, মধ্যাহ্নভোজ ও রাতের খাবার হিসেবে ম্যাগি নুডলস দিতেন স্ত্রী।
স্বামী আরও অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রী দোকানে গিয়ে শুধু ইনস্ট্যান্ট নুডলসই কিনে আনতেন।
তিনবেলাতেই স্বামীকে ম্যাগি নুডলস খেতে দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন হওয়ায় মামলাটির নাম ‘ম্যাগি মামলা’ দিয়েছিলেন বিচারক রঘুনাথ।
রঘুনাথ জানান, শেষ পর্যন্ত পারস্পরিক সম্মতিতে ওই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
এই বিচারক আরো বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাগুলো সাধারণত একটু কঠিন হয়। সন্তানের কথা মাথায় রেখে অনেকক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত একসঙ্গে থাকতে রাজি হয়ে যায় স্বামী-স্ত্রী। তাদের সমস্যার কথা শুনে বিষয়গুলোর গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করি। মানসিক সমস্যার পাশাপাশি শারীরিক চাহিদা মেটাতে না পারার মতো সমস্যাগুলোও বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হয়।
বিচারক রঘুনাথ বলেন, বিবাহবিচ্ছেদের মামলা বাড়ছে। বিবাহবিচ্ছেদ চাইতে হলে কোনো দম্পতিতে কমপক্ষে এক বছর একসঙ্গে থাকতে হয়। এ ধরনের কোনো আইন না থাকলে বিয়ের আসর থেকেই বিচ্ছেদের আবেদন আসতে পারে বলে মন্তব্য করেন রঘুনাথ।
বিচারক রঘুনাথ তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, বিয়ের মাত্র এক দিন পরই বিচ্ছেদের মামলা আসতে দেখা গেছে। সঙ্গীর সঙ্গে কথা না বলা, খাবার প্লেটের ভুল দিকে লবণ দেওয়া, স্ত্রীকে বাইরে নিয়ে না যাওয়াসহ নানা কারণে আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা হতে দেখেছেন তিনি।