অসদাচরণের অভিযোগ তুলে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) কাজী মো. সায়েমুজ্জামানের আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা। কোনো আইনজীবী এডিএম আদালতে আর কোনও পিটিশন দেবেন না। কেউ পিটিশন দিলে তাকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
গত ২২ সেপ্টেম্বর নির্দিষ্ট এজেন্ডায় রীতিমতো সাধারণ সভা ডেকে আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটি রেজ্যুলেশন করে আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়। আর গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সমিতি পিটিশনকারী আইনজীবীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আদালত বর্জনের বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট শরীফ নূর মোহাম্মদ আলী রেজা বলেন, আইনজীবীরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামানের আদালত বর্জন করেছেন। প্রায় একশ’ আইনজীবী তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ, রেকর্ড ছুড়ে ফেলাসহ আইনজীবীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন। তারই প্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট এজেন্ডায় সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিতে নির্বাহী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সমিতি বৃহস্পতিবার আরেকটি কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা হচ্ছে, কোনও আইনজীবী তার (এডিএম) আদালতে আর কোনও পিটিশন দেবেন না। কেউ পিটিশন দিলে তাকে সাসপেন্ড করা হবে। বিষয়টি বার কাউন্সিলকে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।
তবে, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান তার বিরুদ্ধে আইনজীবীদের উত্থাপিত অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনায় মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে যে উদ্যোগ আমি নিয়েছি, তাতে প্রথম বাধা এসেছে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে। কেননা তারা মামলার দীর্ঘসূত্রিতা চান।
তিনি আরও বলেন, দেখা যায় অনেকক্ষেত্রে মামলার দুই পক্ষের আইনজীবী এক হয়ে সময় আবেদন করেন। তাতে সেবাপ্রার্থী হয়রানির শিকার হন। আমি এসব বিষয়ে সোচ্চার ছিলাম। তাই আমি দ্রুততম সময়ে মামলা নিষ্পত্তি করেছি। আমার সময় যতগুলো মামলা দায়ের করা হয়েছে, যে মানুষগুলো এসেছেন- তারা বিচার পেয়েছেন।
সায়েমুজ্জামান বলেন, আবার যে মামলাগুলো (ফৌজদারি কার্যবিধির ৯৮ ধারা) এখানে হয় না, তেমন মামলাগুলো এখানে ঝুলে ছিল। সেগুলো আমি হাইকোর্টের রায়ের বরাত দিয়ে নিষ্পত্তি করেছি। বর্তমানে আমি ৯৮ ধারার মামলাগুলো হাইকোর্ট ডিভিশনের রায়ের বরাত দিয়ে নিচ্ছি না। এ কারণেও আইনজীবীরা ক্ষিপ্ত হয়েছেন।