মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কেউই তথ্য নির্ভর কোন অভিযোগ উপস্থাপন করতে পারেননি। বরং বর্তমান সময়ে ইভিএম আরো বেশি পরীক্ষিত হয়ে গেছে এবং আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫০ থেকে ৮০টি আসনে ইভিএম (EVM) পদ্ধতিতে নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
কক্সবাজারে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালীকরণ (SCDECS) প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত “নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার : চ্যালেঞ্জ সমূহ এবং উত্তরণের উপায়” শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শনিবার (১১ মার্চ) প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল এসব কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে, সে নির্বাচনে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। আর রাজনৈতিক দল গুলোর নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে এককভাবে দায়ী করে কোনভাবেই উচিত নয়।
সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়াল বলেন, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কিছু সমস্যা রয়েছে। নির্বাচনে জয়লাভ করলে বলা হয়, সব ঠিক আছে, আর হারলে বলা হয়, কোন কিছু ঠিক নাই। এমন সংস্কৃতির পরিবর্তন দরকার বলে মন্তব্য করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়াল।
সিইসি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশের গণতন্ত্রের উপরও নানা ধরণের কথা চলছে। তবে বহু বছর ধরে প্রমাণিত হয়েছে, গণতন্ত্রের চেয়ে ভালো এবং পরীক্ষিত আর প্রক্রিয়া নেই।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: আমিনুর রহমান (এনডিসি) এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) মো. আহসান হাবিব খান, নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
কর্মশালায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন IDEA এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো: আনোয়ার হোসেন বিপিএম (বার), কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: শাহীন ইমরান, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুল ইসলাম পিপিএম (বার) প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস.এম শাহাদাত হোসেন সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দিনব্যাপী এই কর্মশালায় নতুন-পুরাতন ভোটার, শিক্ষক, নির্বাচন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি সহ চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ৫০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী কর্মশালা হিসাবে উল্লেখ করে বলেন-এ ধরনের কর্মশালা বাস্তবক্ষেত্রে খুবই উপকারে আসবে। ইভিএম পদ্ধতি সম্পর্কে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিভ্রান্তি নিরসনে এ কর্মশালা ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নির্বাচন প্রক্রিয়া অধিকতর স্বচ্ছতার জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রকে সিসিটিভি’র আওতায় আনার জন্য তিনি প্রস্তাব করলে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা সেটি বিবেচনায় নেবেন বলে আশ্বাস দেন বলে জানান, অ্যাডভোকেট দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু।