আদালতের নির্দেশ, বাড়ি ছাড়তে হবে। কিন্তু আদালতের সেই নির্দেশকে ‘অগ্রাহ্য’ করে ৫২ বছর ধরে বাড়ি দখল করে রেখেছিলেন এক ভাড়াটে! ভারতের গুজরাতের ঘটনা।
১৯৬৫ সালে ওই রাজ্যেরই বাসিন্দা এম বি পটেল বাড়ি ভাড়া দিয়েছিলেন এম কে বারোত নামে এক ব্যক্তিকে। কিন্তু সেই ভাড়াটেই বাড়ির মালিককে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরালেন। দৌড় করালেন আইনের দরজায় দরজায়।
পটেল তাঁর ভাড়াটেকে বাড়ি ছাড়তে বললে তিনি বেঁকে বসেন। তাঁকে উচ্ছেদ করতে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয় পটেলকে। মামলাটি স্থানীয় আদালতে উঠলে বারোতকে বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু আদালতের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন দাখিল করেন বারোত। এবং মামলাটি নানা টালবাহানায় আটকে থাকে।
এরই মধ্যে কেটে যায় ৫১ বছর। আদালতের হস্তক্ষেপের পরেও বাড়ি ফেরত না পেয়ে বেশ হতাশই হন পটেল। কিন্তু হাল ছাড়েননি। ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করেই তবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন, এমন দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে বসেছিলেন যেন! শুরু হয় ফের আইনি লড়াই। এ বার গুজরাত হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পটেল। হাইকোর্টও বারোতকে নির্দেশ দেয় বাড়ি ছাড়ার জন্য।
হাইকোর্টের রায় শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন পটেল। ভেবেছিলেন, যাক, অবশেষে বাড়িটা ফেরত পাওয়া গেল! কিন্তু বিষয়টি যে এত সহজে মিটবে না, সেটা আঁচ করতে পারেননি পটেল। মামলাকে কী ভাবে দীর্ঘতর করতে হয় সেটা সম্ভবত ভালই জানতেন বারোত! তিনি এ বারও হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। বিচারপতিরাও অবাক হয়ে যান কী ভাবে বারোত আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও মামলাটিকে দীর্ঘায়িত করলেন!
বিচারপতিরা বারোতের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, কবে বাড়ি খালি করবেন তিনি? বারোতের আইনজীবী ছ’মাস সময় চেয়ে আবেদন করলেও সেটা খারিজ করে দিয়ে বাড়ি ছাড়ার জন্য এক মাসের সময় দেয় বেঞ্চ। পাশাপাশি এটাও জানায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি খালি না করলে গুজরাত হাইকোর্ট ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সমন জারি করতে পারে। শুধু তাই নয়, এত বছর ধরে জবরদখল করে থাকার জন্য বারোতকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় বেঞ্চ। তবে কত ক্ষতিপূরণ দেবে সেটা গুজরাত হাইকোর্ট ঠিক করবে বলেও জানান বিচারপতিরা।
সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা