‘সিংহাম’-এর মতো ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্রে দেখা যায়, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে মাথা ঘামানো ছাড়াই একজন ‘হিরো পুলিশ’ দ্রুত অপরাধের প্রতিকার করছে। এ ধরনের সিনেমাটিক চিত্র খুবই ক্ষতিকারক বার্তা দেয়।
বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি গৌতম প্যাটেল গতকাল শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এ মন্তব্য করেন।
ভারতীয় পুলিশের বিশেষ দুটি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে মানুষের ‘অধৈর্য’ হওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
পুলিশ বাহিনীর সংস্কার নিয়ে বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংস্কার করা যাবে না যতক্ষণ না আমরা নিজেদের সংস্কার করি।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যখন মনে করে আদালত কাজ করছে না, তখন পুলিশের এসব কাজকে তারা উদযাপন করেন। এ কারণেই ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তি পালানোর সময় এনকাউন্টারে নিহত হলে তারা মনে করে ন্যায়বিচার পাওয়া গেছে।
এ দৃষ্টিভঙ্গি গভীরভাবে পরিব্যাপ্ত ও ভারতীয় সিনেমার মতো জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক মাধ্যমে দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি গৌতম প্যাটেল।
তিনি বলেন, বিচারকদের নম্র, ভীরু, মোটা ফ্রেমের চশমা পরিহিত ও প্রায়শই খুব খারাপ হিসেবে দেখানো হয় সিনেমায়। যেখানে আদালতের বিরুদ্ধে দোষীদের ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ তুলে নায়ক পুলিশ এককতরফা বিচার করে।
এ সময় ‘সিংহাম’ মুভির ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যে ভিলেন চরিত্রের রাজনীতিবিদ প্রকাশ রাজের বিরুদ্ধে পুরো পুলিশ বাহিনীর অভিযানের উদাহরণ দেন বম্বে হাইকোর্টের এ বিচারক। ওই দৃশ্যে কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই দেখানো হয়, ন্যায়বিচার দেয়া হয়েছে।
গৌতম প্যাটেলের মতে, এ বার্তা বিপজ্জনক। এত অধৈর্য হলে চলবে না। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেই অপরাধ বা নির্দোষ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ প্রক্রিয়াগুলো ধীর হয়। কারণ একজন ব্যক্তির স্বাধীনতাকে হরণ করা যায় না। তাই আইনের শাসনকে নষ্ট করে এমন ‘শর্টকাট’ পথ ত্যাগ করতে হবে।
বলিউডের রোহিত শেঠি পরিচালিত ‘সিংহাম’ ফ্র্যাঞ্চাইজির মূল চরিত্রে রয়েছেন অজয় দেবগন। একাধিক কিস্তির এ সিরিজের প্রথম সিনেমা মুক্তি পায় ২০১১ সালে। এটি মূলত আগের বছর তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে নির্মিত একই নামের সিনেমার রিমেক।