দুর্নীতি ও অর্থপাচার রোধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নেতৃত্ব ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। এ অবস্থায় দুদককে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘অর্থপাচার রোধে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), পুলিশের সিআইডি, অ্যাটর্নি জেনারেল ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ব্যর্থ হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠনাও ঢেলে সাজাতে হবে।’
আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর এফডিসিতে দুর্নীতি প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
দুদকের বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটিতে বাইরের চাপ ছিল। অভ্যন্তরীণ অপারগতা ছিল, অদক্ষতা ছিল, সৎ সাহস ও দৃঢ়তার ঘাটতি ছিল। সবমিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি অকার্যকর ছিল। দুদক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এটিকে ঢেলে সাজানো ছাড়া উপায় নেই, করতেই হবে। তবে দুদকে অনেক কর্মকর্তা আছেন যাদের চেষ্টা ছিল, উদ্যোগ ছিল।’
দলীয়করণের কারণে দুদক, পুলিশসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত দলীয়করণের কারণে এসব প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে।’
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের লন্ডনে অর্থপাচারের অভিযোগ ও তথ্য উপাত্ত দুদক, বিএফআইইউ, সিআইডিতে দেওয়া হলেও এসব প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন ইফতেখারুজ্জামান। পাশাপাশি পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে রোডম্যাপ আছে। এর আগেও সিঙ্গাপুর থেকে অর্থ ফেরত আনা গেছে। তবে বিষয়টি সময় সাপেক্ষ।’
অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘সর্বগ্রাসী দুর্নীতি বাংলাদেশের ইতিহাসের বড় কালো দাগ। সর্বস্তরে দুর্নীতি ক্যানসারের রূপ ধারণ করেছে। দুর্নীতির এই ক্যানসার অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। দুদকের ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। এই প্রতিষ্ঠানকে যারা নখ-দন্তহীন বাঘে পরিণত করেছে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।’