বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আজাদ ফিরোজ, সাধারণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেনসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কমিটির ১৫ সদস্যই পদত্যাগ করেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তারা একযোগে পদত্যাগ করেছেন বলে জেলা আইনজীবী সমিতির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো আলতাফ হোসেন জানিয়েছেন।
প্রাপ্ত পদত্যাগ পত্র থেকে জানা যায়, আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. একে আজাদ ফিরোজ টিপু, জুনিয়র সহসভাপতি মো. সলিমুল্লাহ শেখ সেলিম, সহকারী সম্পাদক ফকির মো. নওরেসুজ্জামান (লালন), মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন, নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ রেজওনুর রহমান, সুমন কুমার সিংহ, তামান্না রহমান শশী, রুকসানা পারভীন রুপা, রীমা খাতুন বৃহস্পতিবার দুপুরে সাধারণ সম্পাদক বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আরও পড়ুন: বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবী সহকারী বরখাস্ত
অপরদিকে, আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর রহমান হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুহেলি পারভীন সভাপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আজাদ ফিরোজ বলেন, ‘দুপুরে আমি পদত্যাগ করেছি। কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্যই পদত্যাগ করেছেন।’
কমিটির সবার পদত্যাগের পর জরুরি ভিত্তিতে সমিতির সভা ডেকে প্রবীণ আইনজীবী মাহফুজুর রহমানকে আহ্বায়ক করে এক সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। আহ্বায়ক আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে সমিতির সাধারণ সভা ডেকেছেন।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির এই কমিটি গঠন করা হয়। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে একে আজাদ ফিরোজ টিপুর নেতৃত্বে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন হয়।
পরে করনাকালীন কমিটির মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করা হয়। এরপরে আর কোনও নির্বাচন হয়নি। প্রতিবারই রেজল্যুশন করে কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ রেজল্যুশন অনুযায়ী বর্তমান কমিটির মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত।
জেলার আইনজীবী ইমরান হোসাইন বলেন, সারা দেশের মতো আওয়ামী লীগ বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতিও কুক্ষিগত করে রেখেছিল। তারা জেলা আইনজীবী সমিতিকে নিজের সম্পত্তি মনে করতো। আইনজীবীদের সঙ্গে স্বৈরাচারি আচারণ করতো। এর প্রতিবাদ করে আমি সভাপতির রোষানলে পড়েছিলাম।
সদ্য পদত্যাগ করা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আজাদ ফিরোজ বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আইনজীবী সমিতিতে নিয়মবহির্ভূত কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।
না প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক আইনজীবী জানান, বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতি নানা অনিয়ম করে আসছে। তারা বিচারপ্রার্থীদের প্রয়োজনীয় ওকালাতনামা, হাজিরা ফরম, ফিরিস্তি ফরম, অ্যাফিডেভিট স্টিকার, জামিননামাসহ আদালতের অন্যান্য কাগজপত্রের দাম ইচ্ছামতো নির্ধারণ করেছেন। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়ে গেছে। কিন্তু এসবের প্রতিকার পাওয়ার কোনও উপায় ছিল না।