বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার তথ্য অনুসন্ধান চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদব করা হয়েছে।
আজ রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন রিগ্যান দুদকে এ আবেদন করেছেন।
আবেদনের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করে তিনি জানান, মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরও অনুসন্ধানে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এই আইনজীবী বলেন, জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুন্ন করে। এজন্য বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য অনুরোধ জানিয়ে দুদকে আবেদন করেছি।
প্রসঙ্গত, সিআইডিতে একটি নিজস্ব সিন্ডিকেট গড়ে তুলে একটি নিজস্ব সিন্ডিকেট গড়ে তুলে মোহাম্মদ আলী মিয়া তাঁর আইনবহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা করতেন বলে একটি জাতীয় দৈনিকে সম্প্রতি একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য মতে, মামলা রুজু, অভিযান, তদন্তের সিদ্ধান্ত থেকে নিষ্পত্তি পর্যন্ত সবকিছুই নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন মোহাম্মদ আলী মিয়া। এসব কাজ চালাতে বিভিন্ন ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার ও ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের ক্ষমতা খর্ব করে রেখেছিলেন তিনি।
মোহাম্মদ আলী মিয়ার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অধীন কোনো কর্মকর্তার ‘টুঁ’ শব্দ করার ক্ষমতা ছিল না। তবে তিনি চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়ার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা।
বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার ১৫তম ব্যাচে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর যোগ দেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার মোহাম্মদ আলী মিয়া। ২০২২ সালের আগস্টে তিনি সিআইডিপ্রধান হন। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ১৩ আগস্ট মোহাম্মদ আলীকে সিআইডি থেকে সরিয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এরপর গত ২২ আগস্ট তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
বিপুল সম্পদ
অনুসন্ধানে ঢাকায় মোহাম্মদ আলীর বেশ কিছু দামি জমির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রাজধানীর আফতাবনগর-সংলগ্ন আনন্দনগরে ১২.৩৭ শতক জমির একটি প্লট। এটি বাড্ডা মৌজার ৪৪৩২৫ খতিয়ানের জমি। দাগ নম্বর ১৮১৩০। মিরপুর বাউনিয়া মৌজায় ৪০৭২৩ নম্বর খতিয়ানের ৩০ নম্বর দাগে ৮.২২ শতক জমি রয়েছে তাঁর। পূর্বাচলে ৫ কাঠা ও কেরানীগঞ্জে ৫ কাঠার প্লট রয়েছে। এ ছাড়া অন্যের নামে একাধিক ফ্ল্যাট কিনেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে।
অভিযোগ আছে, মোহাম্মদ আলী মিয়া মালয়েশিয়া ও লন্ডনে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছেন। লন্ডনে এক বাংলাদেশির রিয়েল এস্টেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অংশীদার তিনি। মোহাম্মদ আলীর একমাত্র ছেলে আফনান লাবিব লন্ডনে সেই ব্যবসা দেখভাল করেন।
সিআইডির বর্তমান ও সাবেক চারজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ২০২৩ সালের শুরুর দিকে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছিলেন সিআইডির সাবেক এই প্রধান। ড. ইউনূসকে হয়রানি না করার জন্য কিছু কর্মকর্তা বাধা দিয়েছিলেন।
কিন্তু মোহাম্মদ আলী তাদের বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করার জন্য। পরে তিনি সিআইডির মানি লন্ডারিং শাখায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালানোর চিঠি ইস্যু করেন। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট মোহাম্মদ আলী সিআইডি কার্যালয়ে এসে ড. ইউনূসের বিষয়ে অনুসন্ধান সংক্রান্ত সব কাগজপত্র নিয়ে যান।
রিং আইডির ৩ শীর্ষ কর্তাকে রক্ষা
সিআইডি দীর্ঘদিন অনুসন্ধানের পর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান রিং আইডির মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় মামলা করে। এজাহারে বলা হয়, রিং আইডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আইরিন ইসলাম ও ভাই পরিচালক সাইফুল ইসলাম গ্রাহকদের ৩০২ কোটি টাকা অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছেন। এর মধ্যে ৩৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা পাচার ও আত্মসাৎ করেছেন তারা। কিন্তু পরে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান এই এজাহারকে ‘তথ্যগত ভুল’ উল্লেখ করে আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট (চূড়ান্ত প্রতিবেদন) দাখিল করেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়– শরীফুল, আইরিন ও সাইফুলের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ আদায়, আত্মসাৎ, অবৈধভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে টাকা স্থানান্তর এবং বিদেশে টাকা পাচারের তথ্য পাওয়া যায়নি।
সিআইডির বর্তমান ও সাবেক চারজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মামলাটির প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ পেয়েছিলেন পরিদর্শক মীর কাশেম আলী। তিনি প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়ায় চার্জশিট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু মোহাম্মদ আলী মিয়া তাঁকে ডেকে ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশনা মানতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে অপদস্থ করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তি হিসেবে লক্ষ্মীপুরে বদলি করা হয়।
পরে পরিদর্শক মনিরুজ্জামানকে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেন মোহাম্মদ আলী। তিনি মামলাটির ফাইনাল রিপোর্ট দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুজ্জামান বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি জানান, ‘অনেক আগে রিপোর্ট দিয়েছেন, বিস্তারিত মনে নেই।’
অভিযোগ আছে, অভিযুক্তদের বাঁচিয়ে দিয়ে মোহাম্মদ আলী ১০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন।
বরাদ্দ বণ্টনে অনিয়ম
একজন অতিরিক্ত ডিআইজি ও দু’জন বিশেষ পুলিশ সুপার জানান, সোর্স মানিসহ বিভিন্ন কেনাকাটার জন্য পুলিশ সদরদপ্তর থেকে সিআইডিতে বরাদ্দকৃত টাকার বড় অংশ আত্মসাৎ করেছেন মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি কর্মকর্তাদের বরাদ্দকৃত সোর্স মানির অর্ধেক দিতেন।
এ ছাড়া কর্মকর্তাদের গাড়ির তেল, অফিসের সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সবরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনেন। বাকিটা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। জেলা পর্যায়ে কোনো কার্যালয়ে মামলা-সংক্রান্ত কাগজপত্রসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী সিআইডি সদরদপ্তর থেকে সরবরাহ করার নিয়ম থাকলেও তা পুরোপুরি দেওয়া হয়নি।
ঢাকার বাইরে সিআইডির চারজন এসপির সঙ্গে কথা হয় সমকালের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা কথা বলতে রাজি হন। বলেন, জেলা কার্যালয় পরিচালনার জন্য যেসব স্টেশনারি জিনিসপত্রসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদা দেওয়া হতো তার অর্ধেক সরবরাহ করা হতো। মোহাম্মদ আলী মিয়ার আগে যেসব অতিরিক্ত আইজিপি সিআইডি প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের সময়ে চাহিদার পুরোটাই পাওয়া গেছে।
স্বেচ্ছাচারিতা
সিআইডির ১০ জন কর্মকর্তা সাবেক প্রধানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন সমকালের কাছে। সবাই নাম প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা জানান, মোহাম্মদ আলী সিআইডির প্রশাসন শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম, বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মহানগর পশ্চিম) একেএম ইমরান ভূঁইয়া, সাইবার ক্রাইমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা ও পরিদর্শক মানব শাহাজাদাসহ ছয়জনের একটি বলয় গড়ে তুলেছিলেন। এই কর্মকর্তারা তাঁর সব কার্যক্রমের সহায়ক ছিলেন।
একজন বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, গত প্রায় দুই বছরে সিআইডিতে ডিআইজি, এডিশনাল ডিআইজি ও এসপি পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ ছিল না। সব সিদ্ধান্ত মোহাম্মদ আলীর একার। তাঁর যেটা মনে হয়েছে অধীনদের দিয়ে সেটা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন।
একজন ডিআইজি বলেন, যার যে দায়িত্ব তারা তা যথাযথ পালন করতে পারেননি। কোথায় অভিযান চালানো যাবে বা যাবে না তা সিদ্ধান্ত দিতেন মোহাম্মদ আলী। মামলার আসামি ধরতে হলেও তাঁর অনুমোদন নিতে হতো, যা এর আগে কোনো প্রধানের আমলে হয়নি।
আরও অনিয়ম
সিআইডির সাবেক ও বর্তমান একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, একটি মানি লন্ডারিং মামলায় বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল ও তাঁর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিতে মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বাধ্য করেছিলেন মোহাম্মদ আলী। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এসআই আশিকুর রহমান চার্জশিট দিতে রাজি ছিলেন না।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আশিকুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সিআইডির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, আশুলিয়ার ইপিজেড এলাকার গোল্ডটেক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের বিরুদ্ধে সরকারি বন্ড সুবিধার আওতায় শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানির পর চোরাই বাজারে বিক্রির অভিযোগে গত বছরে চট্টগ্রামের হালিশহরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মামলা করে। এই কোম্পানির মালিক ৫ জন চায়নিজ। তারা নিজেদের গা-বাঁচাতে মালিকপক্ষের হয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী ও সিঅ্যান্ডএফের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় অপর একটি মামলা করেন।
সিআইডির সে সময়ের পরিদর্শক এসএম মিরাজ আল মাহমুদ তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পান কর্মচারীরা নন, গোল্ডটেক্সের ন্যান ও গেলভিনসহ ৫ মালিক শুল্কমুক্ত কাপড় বিক্রির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু মোহাম্মদ আলী মিয়ার নির্দেশ– মালিকপক্ষকে বাদ রেখে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি প্রতিবেদন দিতে হবে। এতে রাজি না হওয়ায় মিরাজকে ঢাকা থেকে সিআইডির জামালপুর কার্যালয়ে বদলি করে দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিদর্শক মিরাজ আল মাহমুদও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ ঘটনায়ও আড়াই কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
যে কোনো সময়ের তুলনায় মামলা নিষ্পত্তি কম
মোহাম্মদ আলী মিয়া সিআইডির প্রধান হিসেবে যোগদানের পর থেকেই মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা কমতে থাকে। এতে বিপাকে পড়তে হতো তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। কর্মকর্তাদের ভাষ্য, তদন্তে শেষে সর্বশেষ অনুমতির জন্য সিআইডি প্রধানের কাছে পাঠালে তা মাসের পর মাস ফেলে রাখতেন তিনি। অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ডিআইজি বা এসপিকে না জানিয়ে পছন্দমতো তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে নতুনভাবে তদন্তের দায়িত্ব দিতেন। কোন মামলায় চার্জশিট হবে নাকি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে– তা নির্ধারণ করে দিতেন তিনি।
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মোহাম্মদ আলী যোগদানের পর ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত (২৩ মাস) সিআইডিতে ৩৩ হাজার ১১৪টি মামলা তদন্তাধীন ছিল। তার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৬ হাজার ৩৮২টি মামলা। ৭ হাজার ৯৪৭টি মামলার মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ২ হাজার ৮৩৫টির এবং ফাইনাল রিপোর্ট (চূড়ান্ত প্রতিবেদন) দেওয়া হয় ১ হাজার ৩টির।
আর মোহাম্মদ আলী যোগদানের আগের সময়ে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত তদন্তাধীন ২৩ হাজার ৬৬২টি মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি সংখ্যা ১৩ হাজার ৫০৮। সে সময় ৯ হাজার ৩০২টি মামলার মধ্যে ৩ হাজার ৫৯৫টিতে অভিযোগপত্র এবং ১ হাজার ১৮১টিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এ সময়ে মামলা প্রত্যাহার হয়েছে ৮৬৭টি। আর মোহাম্মদ আলী মিয়ার সময়ে মামলা প্রত্যাহার হয় ৩ হাজার ১৭৪টি।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতির প্রতিবাদে আইনি নোটিশ
মোহাম্মদ আলীর আমলে সিআইডির পক্ষ থেকে মামলা করা হয় মাত্র ৩৯৮টি। তার আগের একই সময়কালে সিআইডি নিজ উদ্যোগে মামলা করেছিল ২ হাজার ২০১টি। মামলা কম রুজু কেন সে বিষয়ে সিআইডির পরিদর্শক থেকে ডিআইজি পদমর্যাদার সাতজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোহাম্মদ আলী মিয়া সিআইডিতে যোগদানের কিছুদিন পর অধীন কর্মকর্তাদের নিজ উদ্যোগে মামলা করতে নিরুৎসাহিত করেন।
বিভিন্ন মামলার ৫ জন তদন্ত কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পুলিশ প্রতিবেদন তৈরি করে অনুমতির জন্য সাবেক প্রধানের কাছে পাঠালে তিনি ফেলে রাখতেন। এতে অন্য মামলা তদন্ত করতে হতাশা কাজ করত তদন্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে। বেশি দিন ফেলে রাখার কারণে আদালত ওইসব মামলা অন্য সংস্থাকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
এসব বিষয়ে জানতে সাবেক সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।