মুন্সীগঞ্জে ভুয়া টিকাকার্ড বানিয়ে আদালতে জন্ম সনদ সংশোধনের হলফনামা দাখিল করায় গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসের স্বাস্থ্য সহকারী সহ ৩ জনকে ১১ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে দুই দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ সহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইফতি হাসান ইমরান মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ৩ টার দিকে তাৎক্ষণিক সামারি ট্রায়াল করে এই আদেশ দেন।
এর মধ্যে হলফকারী ইসরাত জাহান ও তার মা মেহেরুন নেছাকে ৩ হাজার টাকা করে ৬ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেওয়ার পর তারা আদালতে টাকা দাখিল করেন। এছাড়াও গজারিয়া স্বাস্থ্য সহকারীকে ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেওয়ার পর তিনি আদালতে না থাকায় গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করা হয়। ইসরাত জাহান উপজেলার গুয়াগাছিয়া গ্রামের দ্বীন ইসলামের মেয়ে ও মেহেরুন নেছা দ্বীন ইসলামের স্ত্রী।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ছাত্রী অপহরণের দায়ে ২ আসামীর ১৪ বছর করে কারাদন্ড
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ইসরাত জাহান অষ্টম শ্রেণি পাশের প্রশংসাপত্র, গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র ও টিকাকার্ড সহ আদালতে জন্ম নিবন্ধনে উল্লিখিত বয়স সংশোধনের হলফনামা দাখিল করেন।
এসময় বিচারক তার অন্যান্য কাগজপত্র সঠিক পেলেও টিকাকার্ডের মূল কপি পর্যালোচনা করে দেখতে পান ইসরাত জাহানের টিকাকার্ডে গত ২০০৬ সনের ২৫ অক্টোবর প্রথম টিকা নেওয়ার তারিখ উল্লেখ থাকলেও টিকা কার্ডের ফরমটি ২০২৩ সালের মুদ্রণ।
আদালতের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ইসরাত জাহান জানান তার মা মেহেরুন নেছা টিকাকার্ডটি জাহাঙ্গীর আলমকে দিয়ে বানিয়ে তাকে দিয়েছেন এবং মেহেরুন নেছা টিকাকার্ডটি ভুয়া স্বীকার করে টিকাকার্ডটি তিনি স্বাস্থ্য সহকারী জাহাঙ্গীর আলমকে দিয়ে বানিয়েছেন বলে জানান।
আদালত তাদের বক্তব্য জবানবন্দি আকারে লিপিবদ্ধ করেন। এছাড়া আদালত নিজ উদ্যোগে অডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য সহকারী জাহাঙ্গীর আলমকে যুক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি টিকাকার্ড জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করেন।
বিষয়টি নিশ্চত করে ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী সুমন ভুইয়া জানান, পর্যবেক্ষণ শেষে আদালত দোষী সাব্যস্ত করে জাল টিকাকার্ড তৈরি করায় গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী জাহাঙ্গীর আলমকে ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড, জাল টিকাকার্ড দাখিলকারী ইসরাত জাহানকে ৩ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং জাল টিকাকার্ড তৈরি করায় ইসরাতের মা মেহেরুন নেছাকে ৩ হাজার টাকা অর্থদন্ড সহ প্রত্যেককে অনাদায়ে দুই দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। এসময় আদালতে ইসরাত জাহান ও তার মা মেহেরুন নেছা ৩ হাজার টাকা করে ৬ হাজার টাকা দাখিল করেন।