সরকারের পক্ষে জেলা আদালতে যারা ফৌজদারী মামলা পরিচালনা করেন তাদের বলে পাবলিক প্রসিকিউটর। এরা অ্যাডভোকেট থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তাঁদের সহায়তা করেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর।
আর যারা সরকারের পক্ষে দেওয়ানি মামলা পরিচালনা করেন তাদের বলে গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি)। তাঁদের সহায়তা করেন এজিপি।একটি জেলায় পিপি একজনই। তবে স্পেশাল পিপি একাধিক হতে পারে এবং এপিপি অবশ্যই একাধিক। আবার জিপির ক্ষেত্রেও তাই।
সরকারি আইন কর্মকর্তারা আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য সরকারের কাছ থেকে বেতন পান। তবে অনেক সময় সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা অভিযোগ করেন তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেন সরকারি আইন কর্মকর্তারা।
সাধারণ আইনজীবীগণ যখন কোন মামলায় সাক্ষীর হাজিরা অথবা কোন দরখাস্ত নিয়ে কোর্টে যান তখন পিপি/এপিপিদের মধ্যে অনেকই তাঁদের জন্য বরাদ্দ আছে কিনা? সে কথা সাধারণ আইনজীবীদেরকে জিজ্ঞেস করেন এবং অনেকে আবার টাকার জন্য এজলাস থেকে বের হয়ে আইনজীবী অথবা মক্কেলের পিছনে পিছনে কোর্টের বারান্দায় বের হয়ে আসেন বলেও কেউ কেউ অভিযোগ করেন।
সাধারণ আইনজীবী কিংবা বিচারপ্রার্থীদের এ ধরণের অভিযোগের সত্যতা নিয়ে নানান বিতর্ক থাকলেও সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নবনিযুক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আশিক উদ্দিন ঘোষণা দিয়ে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেট আদালতের নতুন পিপি আশিক উদ্দিন, বাদ ফয়েজ
অ্যাডভোকেট মো. আশিক উদ্দিনের কার্যালয়ের দরজায় টাঙানো একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক ছড়িয়ে পড়েছে। এতে লেখা, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) -কে টাকা দিতে হয়না। দয়া করে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) -এর নামে কাহারো নিকট টাকা দিবেন না। বিনীত মো. আশিক উদ্দিন, পাবলিক প্রসিকিউটর, সিলেট।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে একই ধরণের পোস্ট দিয়েছেন বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর পদে নিয়োগপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেট শেখ আবদুল্লাহ নাসির।
পোস্টে তিনি লিখেন, আসসালামু আলাইকুম, আমি এ্যাড. শেখ আবদুল্লাহ নাসির, বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর পদে নিয়োগ পেয়েছি। আমি বর্তমানে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদলতে পি.পি হিসাবে দায়িত্বে আছি। আমার উপর দায়িত্বাধীন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের এবং আসামী পক্ষের কোন বিচারপ্রার্থীকে কোন প্রকার টাকা আমাকে দিতে হবে না। আমার কথা বলে কোন ব্যক্তি বা কোন কর্মচারী কোন টাকা দাবী করলে, বিচারপ্রার্থী সরাসরি আমাকে জানাবেন। আমাকে জানানোর জন্য বিচার প্রার্থীদেরকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা হইল।
একই ধরণের উদ্যোগ নিয়েছেন সিলেটের সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের পিপি শাহ আশরাফুল ইসলাম (আশরাফ)। তাঁর সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি লিখেন, সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের পিপি আমি শাহ আশরাফুল ইসলাম (আশরাফ) অত্র আদালতে বিচারপ্রার্থী জনগণের জ্ঞাতার্থে ঘোষণা করিতেছি যে, পিপি হিসাবে অত্র ট্রাইব্যুনালে বিচারপ্রার্থী/কারো নিকট কোন টাকা নেওয়া হয় না।