কোরআন পোড়ানো ব্যক্তিকে শাস্তি দিল সুইডেনের আদালত

কোরআন পোড়ানো ব্যক্তিকে শাস্তি দিল সুইডেনের আদালত

প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানোর আয়োজন করায় সালওয়ান নাজিমকে জরিমানার পাশাপাশি স্থগিত শাস্তি প্রদান করা হয়েছে৷ পাশাপাশি গত সপ্তাহে গুলিতে নিহত সালওয়ান মোমিকার বিরুদ্ধে করা মামলাটি বাতিল করা হয়েছে৷

ইসলামবিরোধী এই অ্যাক্টিভিস্টকে গত সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) স্থগিত শাস্তি এবং জরিমানা করেছে সুইডেনের আদালত৷ ঘৃণা ছড়ানোর মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এই শাস্তি দেয়া হয় তাকে৷

সুইডেনের নাগরিক সালওয়ান নাজিমকে ‘চারবার মুসলমান জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশের দায়ে’ দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বলে স্টকহোমের জেলা আদালত জানিয়েছে৷

নাজিমের সহপ্রচারক সালওয়ান মোমিকা মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোয় জড়িত ছিলেন৷ গত সপ্তাহে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান তিনি৷ এমন এক সময় তিনি নিহত হন, যখন তার বিরুদ্ধে করা মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার সময় হয়েছিল৷

আদালত কী বলেছে?

স্টকহোমের আদালত জানিয়েছে যে, নাজিম এবং মোমিকা দুইজনই কোরআন অপবিত্র করা এবং ইসলাম, এর প্রতিনিধি ও মসজিদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করার সঙ্গে জড়িত ছিলেন৷

সুইডেনের ডগেস নিয়েতে পত্রিকা লিখেছে, ‘‘আদালতের যুক্তি হচ্ছে, কোরআন পোড়ানোর ঘটনা পরিষ্কারভাবে বস্তুনিষ্ঠ বির্তক এবং সমালোচনার সীমা অতিক্রম করেছে৷”

এভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে বলেও আদালত জানিয়েছে৷

প্রধান বিচারক গিউরান ল্যুন্ডল এক বিবৃতিতে বলেন, যদিও বাকস্বাধীনতার কাঠামোর মধ্যে ধর্মের সমালোচনার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু তা ‘কাউকে যেকোনো কিছু বলার বা করার পূর্ণাঙ্গ সুযোগ দেয় না যা সেই বিশ্বাসী গোষ্ঠীকে পীড়া দেয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করে’৷ সুইডেনের বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে৷

‘‘কোনো জাতি বা গোষ্ঠীর মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টির অপরাধ বাকস্বাধীনতাকে সীমিত করে৷ তাই শাস্তিমূলক বিধানের প্রয়োগ সীমাবদ্ধভাবে করতে হবে,” বিবৃতিতে লেখা হয়েছে৷

আপিল করবেন নাজিমের আইনজীবী

‘‘আমার মক্কেল মনে করেন, তার বক্তব্য ধর্মের সমালোচনার সুযোগের মধ্যে পড়ে, যা বাকস্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত,” নাজিমের আইনজীবী একথা বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স৷

সুইডেনে ২০২৩ সালে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা বাকস্বাধীনতা এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর স্বাধীনতার ধরন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে৷ অনেক আরব এবং মুসলিম দেশ কোরআন পোড়ানোর নিন্দা জানায় এবং সুইডেনের সাথে সেসব দেশের সম্পর্কে চিড় ধরে৷

মোমিকা এবং তার ‘সহ-প্রতিবাদকারী’ সালওয়ান নাজিমের বিরুদ্ধে গত আগস্ট মাসে একটি জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়৷

চার্জশিটে বলা হয়, তিনি কোরআনে আগুন দেয়াসহ একাধিকবার ধর্মগ্রন্থটির অবমাননা করেছেন৷ এসব করার সময় মুসলমানদের জন্য মর্যাদাহানিকর নানা মন্তব্যও করেছেন তিনি৷ একবার স্টকহোম মসজিদের সামনে প্রতিবাদের আয়োজন করেন মোমিকা৷