মিত্র ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) তিনি এ সংক্রান্ত যে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। তাতে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আদালতটি যুক্তরাষ্ট্র ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বেআইনি ও ভিত্তিহীন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আমেরিকান নাগরিক বা তাদের মিত্রদের নিয়ে আইসিসির তদন্তে সহযোগিতা করা ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আর্থিক ব্যবস্থা ও ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ হবে।
বিবিসি লিখেছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটন সফরকালে ট্রাম্প এ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করলেন।
যুগোস্লাভিয়ার পতন ও রুয়ান্ডা গণহত্যার প্রেক্ষাপটে, নিপীড়ন-নির্যাতন ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ২০০২ সালে আইসিসির যাত্রা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তে যুক্ত থাকা এক ডজনের বেশি আইনজীবী বরখাস্ত
গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গেল নভেম্বরে হেগভিত্তিক এ আদালত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। ইসরায়েল তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। আইসিসি একইসঙ্গে হামাসের এক কমান্ডারের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করেছিল।
হেগভিত্তিক এ আন্তর্জাতিক আদালত একই সময়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে ‘লজ্জাজনক নীতিগত সমতা’ তৈরি করেছে, বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের প্রচার করা এক ফ্যাক্ট শিটে এই অভিযোগ আনা হয়েছে।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, আইসিসির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ‘হয়রানি, নিপীড়ন ও সম্ভাব্য গ্রেপ্তারের’ মুখোমুখি করে মার্কিনিদের ঝুঁকিতে ফেলার ‘এক বিপজ্জনক নজির’ স্থাপন করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য নয়; মার্কিন নাগরিক বা কর্মকর্তাদের নিয়ে তদন্ত বা বিচারে এই আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই বলেও বারবারই বলে এসেছে তারা।
আইসিসি ইরান ও ইসরায়েলবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার-অধিকারকে সংকুচিত করছে বলেও হোয়াইট হাউজের অভিযোগ।
প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকার শেষ সপ্তাহে জো বাইডেনও আইসিসির কড়া সমালোচনা করেছিলেন। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ‘জঘন্য’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ইসরায়েল এবং হামাসকে কখনোই এক দৃষ্টিতে দেখা যেতে পারে না।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে আইসিসির কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন, যারা আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র কোনো যুদ্ধাপরাধ করেছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছিলেন। বাইডেন প্রশাসন পরে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
গত মাসে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন, কিন্তু পরে সেনেটে বিলটি আটকে যায়।