মতামত গ্রহণে ওয়েবসাইট চালু করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন

মিথ্যা মামলা প্রতিরোধে জরিমানা ও ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধির সুপারিশ

মিথ্যা বা হয়রানিমূলক অধিক সংখ্যক আসামির মামলায় অপরাধ সংঘটনে কোনো আসামির সুনির্দিষ্ট কোনো ভূমিকার উল্লেখ না থাকলে সে আসামিকে গ্রেপ্তার না করার সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। একইসঙ্গে ফৌজদারি কার্যবিধি ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের যে বিধান আছে তা সংশোধন করে জরিমানা ও ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংস্কার প্রস্তাবে ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রতিরোধ’ নিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের আইন অঙ্গনে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং সেগুলোর কারণে আসামিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিদের ভোগান্তি একটি নৈমিত্তিক বিষয়। এই বিষয়টির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে এ ধরনের মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া বিভিন্ন আইনের অপব্যবহার এবং অপপ্রয়োগের ঘটনাও কম নয়।

বস্তুত: বাংলাদেশের বাস্তবতা এই যে, দেওয়ানী বা ফৌজদারি প্রায় সব ধরনের মামলাতেই কিছু না কিছু মিথ্যা তথ্য, মিথ্যা দাবি, অতিরঞ্জন এবং অনুদঘাটিত সত্য থাকে। মিথ্যা মামলার বিষয়ে দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধিসহ বিভিন্ন বিশেষ আইনে দণ্ড আরোপ এবং মামলা দায়েরের পদ্ধতি সংক্রান্ত বিধান থাকা সত্ত্বেও এসব বিধান প্রয়োগ করা হয় না বললেই চলে।

বলা বাহুল্য শেষ পর্যন্ত এর দায়ভার চাপানো হয় বিচার বিভাগের ওপর। সুতরাং, বিচার ব্যবস্থার কার্যকরতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিগত দিনের এবং বর্তমানে বিরাজমান বাস্তবতার প্রেক্ষিতে বিষয়টি সম্পর্কে জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয়া সমীচীন।

বিদ্যমান বিভিন্ন আইনে মিথ্যা মামলার শাস্তি

মিথ্যা মামলা সম্পর্কিত বিদ্যমান আইনগুলোর সংক্ষিপ্তসার নিম্নরূপ –

১. The Penal Code, 1860 -এর ২১১ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে Imprisonment for two to seven years and fine. আবার দণ্ডবিধির ২০৩ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে Imprisonment of either description for a term which may extend to two years, or with fine, or with both. এছাড়া একই আইনের ২০৯ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে Imprisonment of either description for a term which may extend to two years, and shall also be liable to fine. তবে শুধু মাত্র ম্যাজিস্ট্রেট বা আপীল আদালত মিথ্যা মামলাকারীর বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করতে পারেন।

২. নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১৭ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অনধিক সাত বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। যে কোনো ব্যক্তি মিথ্যা মামলাকারীর বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করতে পারেন।

৩. এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০২ এর ৪০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অনূর্ধ্ব সাত বৎসর ও অন্যূন দুই বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য।

৪. এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ এর  ৮ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অনধিক সাত বৎসর সশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদণ্ড। যে কোনো ব্যক্তি মিথ্যা মামলাকারীর বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করতে পারেন।

৫. আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২ এর ৬ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অন্যুন দুই বৎসর এবং অনধিক পাঁচ বৎসর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য।

৬. দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৮গ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অন্যূন ২ (দুই) বৎসর বা অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য।

৭. পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ এর ৩২ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য।

৮. মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ এর ১৫ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর এবং অন্যূন ২ (দুই) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে এবং অন্যূন ২০ (বিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড। কোনো লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বা আদালত নিজে মামলা রুজু করতে পারেন।

আরও পড়ুন: স্বতন্ত্র আইন শিক্ষা বোর্ড করার প্রস্তাব

৯. পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর ১৩ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ (দুই) বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা পর্যন্তঅর্থদণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য।

১০. বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর ৪২ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ (এক) লক্ষ টাকা পর্যন্তঅর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য।

১১. ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৫ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অনধিক ১ (এক) বৎসর কারাদণ্ড, তবে ৩ (তিন) মাসের নিচে নয়, বা অনধিক ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, তবে ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকার নিচে নয়, বা উভয় দণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই।

১২. বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন, ২০১৭ এর ৪৪ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ (এক) লক্ষ টাকা পযন্তঅর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য।

১৩. বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ এর ৬ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৩০ (ত্রিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড এবং অর্থদণ্ড অনাদায়ে অনধিক ১ (এক) মাস কারাদণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য।

১৪. যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর ৬ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। কে মামলা দায়ের করবেন তা আইনে উল্লেখ নেই। ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য।

১৫. সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে মূল অপরাধটির জন্য যে দণ্ড নির্ধারিত রয়েছে সেই দণ্ড। যে কোনো ব্যক্তি মামলা দায়ের করতে পারবেন।

১৬. The Code of Criminal Procedure, 1898 এর ২৫০ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হচ্ছে Compensation to such amount not exceeding one thousand Taka or, if the Magistrate is a Magistrate of the third Class, not exceeding five hundred Taka, as he may determine be paid by such complainant or informant to the accused or to each or any of them. Also suffer imprisonment for a period not exceeding six months or pay a fine not exceeding three thousand Taka. ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই মামলা করতে পারবেন।

বিদ্যমান আইনগুলোর মূল বৈশিষ্ট্য

বিদ্যমান আইনগুলো পরীক্ষা করে দেখা যায় যে মামলা দায়েরের পদ্ধতি এবং আরোপযোগ্য দণ্ডের বিষয়ে বিভিন্ন আইনে বিভিন্ন রকম বিধান রয়েছে। এসবের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:

(ক) দণ্ডবিধির ২০৩ এবং ২১১ ধারায় এর ভিত্তিতে কোন মামলা দায়ের করার এখতিয়ার শুধুমাত্র ম্যাজিস্ট্রেট অথবা আপিল আদালতের।

(খ) কয়েকটি বিশেষ আইন (Special Law) যেমন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ অনুসারে মিথ্যা মামলা দায়ের এর বিষয়ে মূল মামলার (মিথ্যা মামলার) যে কোনো আসামি মামলার সূচনা করতে পারবে।

(গ) আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২, এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০২ ইত্যাদি কয়েকটি বিশেষায়িত আইনে মিথ্যা মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে কে মামলা করতে পারবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান নেই। কিন্তু মিথ্যা মামলা দায়েরের জন্য শাস্তির বিধান আছে। অর্থাৎ স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে কেউ পুলিশের নিকট বা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অভিযোগ দায়ের করতে পারে।

(ঘ) বেশ কিছু আইনে মিথ্যা মামলার শাস্তির বিধান আছে কিন্তু মামলাটি সম্পূর্ণ বা আংশিক মিথ্যা কি না সে বিষয়ে বিচারিক আদালত কর্তৃক সিদ্ধান্ত গ্রহণের বাধ্যবাধকতা নেই। আবার এসব আইনে এরূপ ব্যাখ্যাও নাই যে কোনো মামলা আদালতে প্রমাণিত না হওয়ার অর্থ এই নয় যে, অভিযোগকৃত ঘটনা ঘটেনি।

সুপারিশ

বর্ণিত পরিস্থিতিতে মিথ্যা মামলা দায়ের বিষয়ে নতুনভাবে একটি সাধারণ আইন তৈরি করা অথবা বিদ্যমান ১৫- ১৬ টি আইন আলাদাভাবে সংশোধন করা জটিল ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নরূপ পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে :

(ক) মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রতিরোধ বিষয়ে একটি বাস্তবানুগ আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে নিবিড় ও ব্যাপক পরীক্ষা নিরীক্ষা ও অংশীজনদের সাথে আলোচনাক্রমে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ;

(খ) ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০ ধারার অনুরূপ একটি বিধান উক্ত কার্যবিধির ২৩ অধ্যায়ে (দায়রা আদালত কর্তৃক বিচার) সন্নিবেশিত করতে হবে।

(গ) ফৌজদারি কার্যবিধির ২৫০ ধারায় উল্লিখিত জরিমানা ও ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।

(ঘ) মিথ্যা মামলা বিষয়ে এই মর্মে একটি সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যামূলক বিধান যোগ করতে হবে যে কোন মামলা প্রমাণিত না হওয়া অর্থ এই নয় যে মামলাটি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা।

(ঙ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশের প্রতি এ মর্মে নির্দেশনা প্রদান করতে পারে যে, মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ থাকলে (বিশেষতঃ এজাহারে অস্বাভাবিক সংখ্যক অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম থাকলে), অপরাধ সংঘটনে কোনো আসামীর সুনির্দিষ্ট কোনো ভূমিকার উল্লেখ এজাহারে না থাকলে সেই আসামীকে গ্রেফতার করা হবে না।

(চ) আইন মন্ত্রণালয় পাবলিক প্রসিকিউটরদের প্রতি এ মর্মে নির্দেশনা প্রদান করতে পারে যে মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা বলে সন্দেহ করা যায় এরূপ মামলায় কোনো আসামী পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হলে পাবলিক প্রসিকিউটর বা ক্ষেত্রমত, কোর্ট ইন্সপেক্টর বা কোর্ট সাব-ইন্সপেক্টর, আদালতে ওই আসামীর জামিনের বিরোধীতা করবে না।

আরও পড়ুনআইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার সিলেবাস সংস্কারের প্রস্তাব

(ছ) বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টকে এই মর্মে হাইকোর্ট ডিভিশন রুলসের Chapter-IIIB এর অধীনে প্র্যাকটিস ডাইরেকশন জারি করার অনুরোধ করা যেতে পারে যে, ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারার অধীনে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কোনো অভিযোগ আনয়ন করা হলে এবং উক্ত অভিযোগে উল্লিখিত আসামীদের অধিকাংশের অভিযোগকৃত ঘটনার সাথে সুষ্পষ্ট সংশ্লিষ্টতা না থাকলে পুলিশ বা অন্যকোনো ব্যক্তি কর্তৃক যথাযথভাবে অভিযোগটির তদন্ত সম্পন্ন না করে বা ক্ষেত্রমত, ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অনুসন্ধান সম্পন্ন না করে, কোনো অপরাধ সরাসরি আমলে গ্রহণ করা যাবে না।

(জ) বাংলাদেশ বার কাউন্সিল প্রতিটি বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে সকল আইনজীবীকে এ মর্মে সতর্ক করে পরিপত্র জারি করবে যে, কোন আইনজীবী বিচারিক কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করলে (যেমন, ফৌজদারি কার্যবিধির ২০০ ধারার অধীনে ম্যাজিস্ট্রেট কোন কার্যধারা গ্রহণ করলে বা জামিনের আবেদন মঞ্জুর বা না-মঞ্জুর করলে আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, ম্যাজিস্ট্রেটকে হুমকি দেওয়া বা তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা, ইত্যাদি) তার বিরুদ্ধে পেশাগত আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে কার্যধারা সূচনা করা হবে।

(ঝ) ইতোমধ্যে যে সব মামলা পুলিশ বা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট দায়ের হয়েছে এবং তদন্তাধীন আছে সেগুলোর তদন্ত যাতে দ্রুত সম্পন্ন করে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের ব্যাপারে ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করা হয় বা চার্জশীটে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার (নট সেন্ট আপ) আবেদন করা হয়, সে জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্দেশনা প্রদান। এক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ও সরকারি কৌশুলিদের ইতিবাচক ভূমিকা রাখার জন্য নির্দেশনা দিতে পারে।

(ঞ) উল্লিখিত (ঝ) দফার কার্যক্রম তদারকির জন্য প্রতি বিভাগে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে যাতে করে কোনো প্রকৃত অপরাধী পুলিশের সাথে যোগ-সাজশের মাধ্যমে মামলা থেকে অব্যাহতি না পায়।