২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ হাজার ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের (২০২৪-২৫) ১ হাজার ৯২২ কোটি টাকার তুলনায় ২৪৫ কোটি টাকা বেশি। বরাদ্দের এ অগ্রগতি বিচার বিভাগের কার্যক্রম ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রতি সরকারের গুরুত্বের প্রতিফলন।
গত সোমবার (২ জুন) বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে বাজেট বক্তৃতা উপস্থাপন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রস্তাবিত বাজেটে আইন ও বিচার বিভাগের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হলেও সুপ্রিম কোর্ট এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের জন্য এবারের বাজেটে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দ ২৫২ কোটি টাকার তুলনায় ২ কোটি টাকা কম। উল্লেখ্য, এই বরাদ্দ শুধুমাত্র পরিচালন ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত।
একইভাবে, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪২ কোটি টাকা পরিচালন খাতে এবং ৫ কোটি টাকা উন্নয়ন খাতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই বিভাগের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫২ কোটি টাকা—যার মধ্যে ৪৮ কোটি টাকা পরিচালন এবং ৪ কোটি টাকা উন্নয়ন ব্যয়ে বরাদ্দ ছিল।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা জানান, বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে হাইকোর্ট বিভাগের ১৩ জন বিচারপতির সমন্বয়ে ১৩টি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা দেশের অধস্তন আদালতসমূহের কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবে। এছাড়া বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার জন্য “বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫” জারি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, একটি আন্তর্জাতিক মানের জুডিশিয়াল একাডেমি স্থাপনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এই একাডেমির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট এবং অধস্তন আদালতের বিচারক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদান করে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে।
প্রসঙ্গত, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে রাজস্ব বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকা। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
সংসদের বাইরের বাস্তবতায় এবার বাজেট পেশ করা হয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকে, যা দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এক নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।