চট্টগ্রামে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও দেওয়ানী কার্যবিধি সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫ বিষয়ক উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রামে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও দেওয়ানী কার্যবিধি সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫ বিষয়ক উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

চট্টগ্রামে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও দেওয়ানী কার্যবিধি সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫ বিষয়ক উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল এবং দেওয়ানী কার্যবিধি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর প্রয়োগ, সমস্যা ও সমাধান বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে একটি উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ধরনের আলোচনা এটাই প্রথম এবং এতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম এবং প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন মহানগর দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান এ এস এম বদরুল আনোয়ার। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, সিনিয়র সহকারী জজ, আইনজীবী সমিতির সাবেক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন স্তরের সিনিয়র আইনজীবীরা। সঞ্চালনায় ছিলেন সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুল বারী।

আলোচনা সভায় বক্তারা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও দেওয়ানী কার্যবিধি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর প্রয়োগ, সমস্যা ও সমাধান বিষয়ে বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য ও করণীয় সর্ম্পকে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন।

বক্তারা বলেন ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ভূমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, তবে এর প্রয়োগে কিছু সমস্যা বিদ্যামান রয়েছে। এই সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে মামলার দীর্ঘসূত্রিতা, আপিল প্রক্রিয়ার জটিলতা, প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব, পুরানো ভূমি জরিপ এবং রেকর্ডের বিভিন্ন ত্রুটি। এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি, জনবল নিয়োগ, এবং আপিল প্রক্রিয়া সহজ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

আলোচনায় উঠে আসা মূল সমস্যা ও প্রস্তাবনা:

  • মামলার দীর্ঘসূত্রিতা: দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির জন্য ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি করা উচিত

  • আপিল প্রক্রিয়ার জটিলতা: আপিল প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত

  • জনবল সংকট: ট্রাইব্যুনালগুলোতে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করা

  • রেকর্ড ত্রুটি: ভূমি জরিপ ও রেকর্ড আধুনিকায়ন করে ত্রুটিমুক্ত করা

  • প্রযুক্তির ব্যবহার: আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করতে হবে

  • বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (ADR): ভূমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতিগুলিও উৎসাহিত করা যেতে পারে।

বক্তারা আরও বলেন, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল হলো ভূমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি বিশেষ আদালত বা ট্রাইব্যুনাল। এটি মূলত ভূমি জরিপ এবং রেকর্ড সংশোধনের সাথে সম্পর্কিত বিরোধগুলির বিচার করে থাকে।

এই ট্রাইব্যুনালগুলোর মূল কাজ হল ভূমি মালিকানার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং ভূমি সংক্রান্ত বিরোধগুলোর সমাধান করা। মামলায় ন্যায় বিচার নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনালে দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের কতেক ধারা সংযোজনের পক্ষেও বক্তারা মতামত প্রদান করেন।

এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ভূমি বিরোধ নিরসনে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো জোরদারকরণে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে বলে অভিমত দেন উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবীবৃন্দ।