মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধানকে কক্সবাজার থেকে প্রত্যাহার করে পিরোজপুরে বদলি করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) দাউদ হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বদলির এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গত সাড়ে পাঁচ মাস আগে তিনি কক্সবাজার কার্যালয়ে উপপরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের উপপরিচালক মো. রাশেদুল ইসলাম।
এই বদলিকে ‘শাস্তিমূলক’ বলে মনে করছেন অনেকেই। কারণ তিনি শুধু মামলাটিই দায়ের করেননি, বরং তার সরাসরি তত্ত্বাবধানে চার্জশিটও দাখিল হয়েছিল। দুদকের একাধিক অভ্যন্তরীণ সূত্রও এই বদলিকে ‘শাস্তিমূলক’ বলে অভিহিত করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৩০ মে গুলশান আনোয়ার প্রধান, দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রাপ্য ৩৯৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
কিন্তু চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মামলাটি “দুর্বল ও অযৌক্তিক” বলে রায় দিয়ে বাতিল করে দেয়।
চার সদস্যের বেঞ্চের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
এর কয়েক মাসের মধ্যেই গুলশান আনোয়ারকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে ড. ইউনূস তার খোঁজ নেন জানিয়ে গুলশান আনোয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ড. ইউনূস স্যারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভালো। আমি যেহেতু স্যারের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বা বাদী ছিলাম, তাই সরকার গঠনের পর তিনি আমার নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন। আমার কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না জানতে চেয়েছেন।’
মামলার বাদী হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে সরকার যেভাবে নির্দেশ দিয়েছিল, সেভাবেই তখন আমি সরকারের পক্ষে কাজ করেছিলাম। এখন যদি সরকার কোনো নির্দেশ দেন, সেটিও আমি বাস্তবায়ন করব।’
দুদকের এ কর্মকর্তার দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন। তার পদোন্নতি হয়নি। দুর্নীতির কথা তিনি অস্বীকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।