আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০২৫ গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন করেছে। এ বিষয়ে তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল উল্লেখ করেন, এই আইন কার্যকর হলে গ্রেপ্তার ও আটক নিয়ে মানুষের হয়রানি অনেক কমে যাবে, পুলিশের জবাবদিহিতা বাড়বে এবং বিচার কাজ দ্রুততর হবে।
এই আইনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হচ্ছে –
পরিচয় গোপন করে গ্রেপ্তার নয়: পুলিশকে পরিচয় প্রকাশ করে গ্রেপ্তার করতে হবে। গ্রেপ্তার করলেই মেমোরেন্ডাম অভ্ অ্যারেস্ট পূরণ করতে হবে পুলিশকে। গ্রেপ্তারকৃতের সব আইনি সুরক্ষা প্রতিপালিত হয়েছে কি না, মেমোরেন্ডাম অভ্ অ্যারেস্টে তার চেকলিস্ট পূরণ করতে হবে, যা গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপন করতে হবে।
৫৪ ধারার অপব্যবহার রোধ: ৫৪ ধারায় পুলিশের গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা অবারিত থাকছে না। কগনিজেবল অফেন্স পুলিশের সামনে ঘটতে হবে বা পুলিশকে সন্তুষ্ট হতে হবে যে আসামি এই অপরাধ করেছে। সন্তুষ্টির কারণ লিপিবদ্ধ করতে হবে।
পরিবারকে জানানো বাধ্যতামূলক: গ্রেপ্তারের পর গ্রেপ্তারকৃতের পরিবারকে যত দ্রুত সম্ভব (না হলে অবশ্যই ১২ ঘণ্টার মধ্যে) জানাতে হবে।
আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ: গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দিতে হবে।
আঘাত বা অসুস্থতা হলে চিকিৎসা: গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি বা রিমান্ডের পর আসামি অসুস্থ বা আহত হলে তাকে ডাক্তার কর্তৃক পরীক্ষা করতে হবে এবং আঘাতের কারণ নিশ্চিত হতে হবে, তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশের দায় থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের তথ্য জনসম্মুখে: যে সংস্থাই গ্রেপ্তার করুক না কেন, গ্রেপ্তারের তথ্য সংশ্লিষ্ট থানায় জিডিভুক্ত করতে হবে। প্রত্যেক থানায় ও জেলা/মেট্রো পুলিশ হেডকোয়ার্টারে প্রতিদিনের গ্রেপ্তারের তথ্য ও তালিকা প্রদর্শন করতে হবে।
সাক্ষী ও ভিকটিম সুরক্ষা: সাক্ষী ও ভিকটিমের সুরক্ষায় আদালত প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারবে। আদালত সাক্ষীর প্রয়োজনীয় খরচ দিতে পারবে।
রিমান্ডের সময়সীমা নির্ধারণ: এক মামলায় পুলিশ রিমান্ড কোনোভাবে ১৫ দিনের বেশি দেয়া যাবে না, আগে আনলিমিটেড দেওয়ার সুযোগ ছিল।
মিথ্যা মামলা দিলে সাজা বাধ্যতামূলক: মিথ্যা মামলা প্রমাণিত হলে বাধ্যতামূলক সাজা দিতে হবে এবং এক্ষেত্রে অর্থদণ্ড বৃদ্ধি করে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা করা হয়েছে।