ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বিভিন্ন অপরাধে কারাগারে যারা আসে তারা আমাদের সমাজেরই অংশ। এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তারা যেন পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের সংশোধিত হওয়ার সুযোগ থাকতে হবে। জেলখানায় বন্দিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন শেষে গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এ কারাগারে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা চালু আছে। এখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একজন শিক্ষক কয়েদি ও হাজতিদের ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে থাকেন। কারাবন্দিদের মধ্য থেকেও কয়েকজন এ কাজে সম্পৃক্ত রয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষের চাহিদাসাপেক্ষে এ কারাগারে আরো ধর্মীয় শিক্ষক নিযুক্ত করব। এখানে বন্দি হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজতি ও কয়েদিদের জন্যও আমরা ধর্মীয় শিক্ষক নিযুক্ত করব।
ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, কারাগারের নিরাপত্তা ও কিছু কৌশলগত কারণে কারা অভ্যন্তরে মসজিদ, মন্দির বা অন্য কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কারাবন্দিরা যাতে ধর্মচর্চা ও উপাসনা করতে পারে সেরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। এজন্য জায়নামাজ, কার্পেট ও ধর্মীয় বই-পুস্তকসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সরবরাহ করা হবে।
আরও পড়ুন : প্রস্তাবিত ফৌজদারি কার্যবিধি কার্যকর হলে গ্রেপ্তার-আটকে হয়রানি কমবে : আইন উপদেষ্টা
উপদেষ্টা কারাগারটির কেন্দ্রীয় মক্তব, হিফজ শাখা, লাইব্রেরি, মননচর্চা ও শরীরচর্চা কেন্দ্র, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার, রন্ধনশালা, বিভিন্ন কারিগরি শাখা, ওয়ার্ড ও সেল ঘুরে দেখেন এবং হাজতি ও কয়েদিদের সাথে কথা বলেন। তিনি দ্রুততম সময়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে ধর্মীয় বইপত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন।
কারাগার পরিদর্শনের সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আঃ ছালাম খান, আইজি (প্রিজন) সৈয়দ মোঃ মোতাহের হোসেন, এআইজি (প্রিজন) জাহাঙ্গীর কবির, সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার-সহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কারা মক্তব চালু করে। বর্তমানে এ কারাগারে বারোটি মক্তব চালু আছে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত এ মক্তবগুলো থেকে আট হাজার ২২২ জন কারাবন্দি আরবি শিক্ষা, দুই হাজার ৪৭০ জন কারাবন্দি কুরআন শিক্ষা অর্জন করেছেন। এ পর্যন্ত দুই হাজার ৫০০ বার কুরআন খতম হয়েছে।