জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী প্রমীলা দেবীর স্মৃতি বিজড়িত মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা জমিদার বাড়ি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সংস্কৃতি সচিব, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে রুলের জবাব দিতে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ৬০ দিনের মধ্যে গৃহীত পদক্ষেপের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবেদনের পক্ষে রিটকারী আইনজীবী জাহিদ আহমেদ হিরো নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাদ্দেস-উল-ইসলাম (টুটুল)।
এর আগে গত ৩ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে সংস্কৃতি সচিব, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।
সতেরো শতকে দিনাজপুরের ব্যবসায়ী পঞ্চানন সেন তেওতা জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তীতে এ বাড়ি নজরুল-প্রমীলা প্রেমকাহিনীর সাক্ষী হয়ে ওঠে।
এই বাড়িতেই কবি নজরুল ইসলাম তার স্ত্রী প্রমীলা দেবীর রূপে মুগ্ধ হয়ে অমর কবিতা “তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সেকি মোর অপরাধ” রচনা করেছিলেন। বাড়িটির পাশেই ছিল প্রমীলা দেবীর বাবার বাড়ি, যা নজরুলের জীবনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল।
সাহিত্য গবেষকরা মনে করেন, তেওতা জমিদার বাড়ি শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি জাতীয় কবির ব্যক্তিজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সাক্ষী। এ কারণে স্থাপনাটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণ করা জরুরি।