পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধে সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ
আইনি নোটিশ

সিএনজি অটোরিকশার ‘মহাজন সিস্টেম’ বন্ধ করে চালকদের মালিকানা নিশ্চিতে সরকারকে আইনি নোটিশ

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় জনপরিবহন সিএনজি অটোরিকশা বর্তমানে প্রকৃত অর্থে জনবান্ধব সেবা দিতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত তথাকথিত “মহাজন সিস্টেম”-এর কারণে চালকরা শোষণের শিকার হচ্ছেন এবং সাধারণ যাত্রীরাও প্রতিদিন অতিরিক্ত ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

বর্তমান প্রথায় মহাজনরা প্রতিদিন গড়ে ১,২০০ টাকা হারে চালকদের কাছে ভাড়া আদায় করে থাকেন। পাশাপাশি গ্যাস, খাবার ও ছোটখাটো মেরামতের খরচ মিলে প্রতিদিন একেকজন চালকের ব্যয় দাঁড়ায় ৩,০০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। এ অবস্থায় চালকদের পক্ষে মিটারভিত্তিক ভাড়া নেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে তারা যাত্রীদের কাছ থেকে নিয়মিত ভাড়ার তিন গুণ বা তারও বেশি আদায় করেন।

উদাহরণস্বরূপ, যেখানে একটি সীমিত দূরত্বের মিটারভিত্তিক ভাড়া ১০০ টাকা হওয়ার কথা, সেখানে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ৩০০ টাকা বা তারও বেশি।

এতে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং একটি অরাজক পরিবহন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে আজ মঙ্গলবার (২৬শে আগস্ট) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান সরকারকে একটি আইনি নোটিশ প্রেরণ করেছেন।

নোটিশটি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ও ইমেইলের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ (BRTA) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, মহাজন সিস্টেম মূলত ঔপনিবেশিক আমলের জমিদারি প্রথার আধুনিক রূপ, যা শ্রমিক শ্রেণিকে অন্যায্যভাবে শোষণ করছে এবং বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫ (রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব), অনুচ্ছেদ ২৭ (আইনের দৃষ্টিতে সমতা) এবং অনুচ্ছেদ ৩২ (জীবনের অধিকার) সরাসরি লঙ্ঘন করছে।

নোটিশে উত্থাপিত দাবিগুলো হলো—

১. মহাজন সিস্টেম অবিলম্বে বিলুপ্ত করতে হবে এবং প্রত্যেক চালককে তাদের নিজস্ব সিএনজি অটোরিকশার মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে।
২. চালকদের জন্য বিশেষ ব্যাংক ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে সহজ শর্তে কিস্তিতে সিএনজি অটোরিকশা কেনা সম্ভব হয়।
৩. যেহেতু সিএনজি অটোরিকশা একটি জনপরিবহন, তাই এ খাতে সব ধরনের অতিরিক্ত কর, ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।
৪. সিএনজি অটোরিকশা সরাসরি উৎপাদনমূল্যে বিক্রি করতে হবে, যাতে প্রকৃত চালকরা মালিক হতে পারেন এবং যাত্রীসাধারণ ন্যায্য ভাড়ায় ভ্রমণ করতে পারেন।

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই দাবিসমূহ ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে জনস্বার্থে রিট আবেদন দায়ের করা হবে।