ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে জানিয়েছে যে গোপনীয়তা বা ‘রাইট টু প্রাইভেসি’ তার দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। শীর্ষ আদালতের নয় সদস্যের বিশেষ সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এই রায় দিয়েছে।
এর আগে সর্বোচ্চ আদালতের দুইটি বেঞ্চ পৃথক রায়ে বলেছিল, গোপনীয়তার অধিকার নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। সেই দুইটি রায় আজ খারিজ হয়ে গেল।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক এক বেঞ্চ জানিয়েছে, সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী জীবনের অধিকারের মতোই নিজের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখাও একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে।
আধার কার্ডকে সরকার যেভাবে ব্যাংকিং, আয়কর, ভর্তুকি ও নানা সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প, জন্ম-মৃত্যুর সনদ দেওয়াসহ নানা পরিষেবার জন্য বাধ্যতামূলক করছে, এর ফলে নাগরিকের ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য সরকারের হস্তগত হচ্ছে কী না, তা নিয়েই এই মৌলিক অধিকারের প্রশ্নটি আদালতে এসেছিল।
আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করার প্রসঙ্গে অবশ্য আদালত আজ কোনও মন্তব্য করেনি। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘মূল প্রশ্নটির সমাধান করে দিয়েছে আদালত। এবার আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করা সংক্রান্ত বিষয়গুলো অন্য, কম সদস্যের বেঞ্চে যাবে। সেখানে আজকের রায়ের প্রেক্ষিতে রায় দেওয়া হবে।’
ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র ‘আধার কার্ড’য়ে নাগরিকদের আঙ্গুলের ছাপ, চোখের মনির ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য সংগৃহীত থাকে। সেই তথ্য সংগ্রহে একাধিক সংস্থা যুক্ত থাকে। বেশ কয়েকবার আধার কার্ডের তথ্য পাচারেরও অভিযোগ সামনে এসেছে।
আইনজীবীরা জানান, নানা সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প বা আয়কর জমা দেওয়ার ব্যাপারে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করতেই পারে সরকার। কারণ তারা ওইসব প্রকল্প পরিচালনা করছে। কিন্তু কে কী জিনিস কিনছে, ট্রেন বা প্লেনে চেপে কোথায় যাচ্ছে সেসব কারণেও যদি আধার চাওয়া হয়, তার অর্থ প্রত্যেক নাগরিকের প্রতিটা কাজের ব্যাপারে সরকার জানতে পারছে। আজকের রায়ের পরে এটা পরিষ্কার হয়ে গেল যে সেই সব তথ্য গোপন রাখার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের রয়েছে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম